জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

অবশেষে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা উপলব্ধি মেয়র খোকনের

এবিএনএ : ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিনে দিনে আরো জটিল হচ্ছে বলে এখন মনে করছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। নগর কর্তৃপক্ষ এই পরিস্থিতি মোকাবেলায কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে জনগণের সচেতনতার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি। রবিবার শেরে বাংলানগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ খবর নিয়ে যান। এ সময় তিনি এ কথা বলেন। চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে শয্যা পেতেই হিমশিম খাচ্ছে রোগীরা। আর প্রায় প্রতিদিনই আসছে মৃত্যুর খবর। আর উদ্বিগ্ন হচ্ছে মানুষ। রাজধানীর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা শহরেও শনাক্ত হচ্ছে রোগীরা। অবশ্য তাদের সিংহভাগই ঢাকা থেকে যাওয়া।

ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থতার জন্য সমালোচনায় থাকা মেয়র খোকনের সাম্প্রতিক এক উক্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। দৈনিক প্রথম আলো একটি প্রতিবেদন করেছিল, ‘ডেঙ্গু রোগী সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়েছে’। আর দুদিন পর মেয়র খোকন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘মশা নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়। যে তথ্য এসেছে সাড়ে তিন লাখ আক্রান্তের কাল্পনিক তথ্য…. এটা সম্পূর্ণভাবে কাল্পনিক, বিভ্রান্তিমূলক। ছেলে ধরা, সাড়ে তিন লাখ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত একই সূত্রে গাঁথা।’ এই বক্তব্যের পর সমালোচনা আরো বাড়তে থাকে মেয়রের। এর মধ্যেও তিনি শুক্রবার বলেন, ডেঙ্গু মহামারীর আকার নেয়নি। তবে দুই দিন পর তার মুখে উল্টো বক্তব্য।

মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি একটু একটু করে অবনতির দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিন নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে।’ ‘সরকারের সকল সংস্থার সমন্বয়ে সিটি করপোরেশন সহ অন্যান্য সকল সংস্থা এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

ডেঙ্গুর বাহক এডিশ মশা নোংরা পরিবেশে থাকে না। ঘরোয়া পরিবেশে জমে থাকা পানিতেই এর জন্ম। কিন্তু নগর কর্তৃপক্ষের মশক নিয়ন্ত্রণে কর্মকান্ড সব ঘরের বাইরে। নগরবাসীর অসচেতনতার বিষয়টিও সামনে আসেনি। মেয়রও বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতনতা এবং অংশগ্রহণে কোন বিকল্প নেই। ‘আমার মনে হচ্ছে জনগণ আগের তুলনায় এখন থেকে অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে, জনগণ অনেক বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে এবং নিজেদের আঙ্গিনাকে আগের তুলনায় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছে।’

‘জনগনের সচেতনতা এবং সরকারের যে সমস্ত উদ্যোগগুলো রয়েছে এর মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রতিদিন নতুন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।’ ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ হাজারের বেশি রোগীর মধ্যে সাড়ে সাত থেকে আট হাজার মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন বলেও জানান মেয়র। বলেন, ‘কেবল আক্রান্তের সংখ্যা নয়, কী পরিমাণ মানুষ সুস্থ হয়েছেন সেই তথ্যগুলো গণমাধ্যমে আসা প্রয়োজন।’

মশা মারতে আগামী সপ্তাহে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনামূল্যে অ্যারোসল বিতরণ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন মেয়র। এক প্রশ্নে খোকন বলেন, তাদের সব কাউন্সিলর নিবেদিত প্রাণ হয়েই মশা নিধনে কাজ করছেন। কারো গাফিলতি নেই।

Share this content:

Related Articles

Back to top button