এবিএনএ : স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরাের মেশিনম্যান আব্দুস সালাম প্রেস থেকে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বের করতেন। এরপর তারই খালাতো ভাই অন্যতম মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন মুন্নুকে তা সরবরাহ করা হতো। জসিম তার বিভিন্ন সহযোগীর কাছে ফাঁস করা প্রশ্ন সরবরাহ করতেন। জসিমকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান আব্দুস সালাম প্রশ্নফাঁসের মূলহোতা। মূলত তার হাত ধরেই প্রশ্নফাঁসের প্রক্রিয়ার শুরু। আর প্রশ্নফাঁসের এই প্রক্রিয়ায় জড়িত পাঁচ-ছয়জন অসাধু চিকিৎসক এবং তিন-চারটি কোচিং সেন্টারও।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের সন্ধান পায় সাইবার পুলিশ। ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এস এম সানােয়ার হােসেনকে গ্রেফতারের পর সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
তিনি আরও বলেন, সানােয়ারের তথ্যের সূত্র ধরে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াসহ জাকির হােসেন দিপু এবং পারভেজ খানকে। জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়।
আশরাফুল আলম বলেন, গত ২০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের সঙ্গে জড়িত আরও সাতজনকে গ্রেফতার করে সাইবার পুলিশ। গ্রেফতাকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে মাস্টারমাইন্ড আব্দুস সালামের নাম। তিনি বলেন, অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষ হলে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে। প্রশ্নফাঁসের এই প্রক্রিয়ায় পাঁচ-ছয়জন অসাধু চিকিৎসক এবং তিন-চারটি কোচিং সেন্টারের জড়িত থাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয় বিশদ তদন্ত চলছে।
গ্রেফতার সালামের সম্পদ সম্পর্কে জানতে চাইলেন আশরাফুল আলম বলেন, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা নেই বললেই চলে তবে তারা নেশা হলো জমি কেনা। তিনি কী পরিমাণ জমিজমার মালিক তা জানার জন্য চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, মেডিকেল প্রশ্নফাঁসে ভর্তি অনেকেই এখন চিকিৎসক। মামলার তদন্ত শেষে পরবর্তীতে জালিয়াতি করে ভর্তি ও পাস করা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে। আব্দুস সালামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। এই চক্রে আর কারা কারা জড়িত তার জন্য চেষ্টা করা হবে।
Share this content: