জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

মারা গেল ‘বঙ্গ বাহাদুর’

এ বি এন এ : ভারত থেকে বন্যার পানিতে ভেসে আসা বন্য হাতি ‘বঙ্গ বাহাদুর’ শেষ পর্যন্ত মারা গেছে।

মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মারা যায় হাতিটি।

বাংলাদেশ বন বিভাগের সাবেক বন সংরক্ষক কর্মকর্তা ড. তপন কুমার দে বলেন, উদ্ধার হওয়া ভারতীয় হাতিটিকে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিপাকে পড়েন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। সোমবার তৃতীয় দফা টাংকুলাজারের মাধ্যমে আটক করার পর ২৪ ঘন্টা পার না হতেই ‘বঙ্গ বাহাদুর’ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়তে থাকে সে, এর পরই আজ ভোরে মারা যায় হাতিটি।

এর আগে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কয়ড়া গ্রামে জলাশয়ে থাকা হাতিটি রোববার ভোর ৫টার দিকে পেছনের পায়ের শেকল ছিঁড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বন বিভাগের উদ্ধারকারী সদস্যরা সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে দেখে ‘বঙ্গবাহাদুর’ জলাশয়ে নেই।

পরে খোঁজাখুঁজির পর দুই কিলোমিটার দূরে উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের সোনাকান্দ গ্রামের একটি খোলা জায়গায় হাতিটিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে উদ্ধারকারী দল। এখানে তাকে অচেতন করার জন্য ট্র্যাংকুলাইজারের মাধ্যমে ৪টি ডার্ট ছোড়া হয়।

এরপর হাতিটি পড়ে না গিয়ে কাঁদা পানিতে দাঁড়ানো অবস্থায় ঝিমোতে ছিল। এ সময় হাতির পেছনের ও সামনের পায়ে শেকল ও রশি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। শেষ পর্যন্ত ওই কাঁদা পানিতেই অবস্থান করছিল হাতিটি।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতিটিকে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে অচেতন করা হয়। পরে তাকে ধরে শেকল ও রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। শুক্রবার রাতে সামনের দু’পায়ের শেকল ও রশি ছিঁড়ে ফেলে হাতিটি। এ সময় আশপাশের গাছপালা ভাংচুর করে। রাতভর হাতিটির গর্জন ও তাণ্ডবে আতংকিত হয়ে পড়ে স্থানীয়রা।

এর আগে গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে বন বিভাগের সদস্যরা হাতিটির সামনের দুই পা বেঁধে ফেলার চেষ্টা করলে সেটি পাশের গভীর জলাশয়ে অবস্থান নেয়।

ভারতের আসামের কাজি রাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের হাতিটি ১৭ জুন বন্যার পানিতে ভেসে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে আসে। পরে গাইবান্দা, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে ২৭ জুন সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার ছেন্নার চর যমুনা নদীর দ্বীপে আটকে পড়ে।

এখানে কয়েক দিন অবস্থান করার পর ২৮ জুলাই জামালপুরের সরিষাবাড়ী চলে আসে হাতিটি। এ সময় হাতিটিকে পর্যবেক্ষণ করেন বাংলাদেশ বন বিভাগের ৩টি ইউনিটের ১৭ সদস্য। তিনদফা চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে উদ্ধার অভিযানে ব্যর্থ হন তারা। তারপর হাতিটি উদ্ধারের জন্য ভারতের তিন সদস্যের দল সরিষাবাড়ীতে আসেন ৪ আগস্ট। দলটি হাতি উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ৭ আগস্ট সরিষাবাড়ী ত্যাগ করে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button