লাইফ স্টাইল

বেতন বাড়ানোর কথা বলব কীভাবে?

এবিএনএ : চাকরিতে প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে রাতুলের। কিন্তু বেতন আর বাড়ছে না। তাই বলে কি খরচের সীমা আছে? গ্রাফ শুধু ওপরের দিকেই উঠছে। আর এদিকে আয়-ব্যয়ের টানাটানিতে রাতুলের জীবন যায় যায়। অনেক দিন ধরেই ঠারেঠোরে বসকে বলতে চাইলেও সরাসরি আর বলা হয়ে ওঠেনি। কিছুটা লজ্জা, কিছুটা সংকোচ আর এক চিমটি হতাশাতে বারবারই পেট থেকে আর মুখে আসেনি কথাটা।

বেতন বাড়ানোর কথা বলতে গিয়ে এই সংকোচ আর লজ্জার কারণে অনেক কর্মীই আর বলতে পারেন না নিজের চাহিদা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আপনি হয়তো ঠিক সময়ই অফিসে আসছেন, ঠিকঠাক কাজ করছেন, কিন্তু বসের সুনজর পেলেও বেতন বাড়ানোর চিঠি আর আসছে না। এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র ৪১ শতাংশ কর্মী বসদের কাছে বেতন বাড়ানোর দাবি তোলেন। আর চাকরিদাতা কর্তৃপক্ষের ৮৪ শতাংশ এমন দাবির অপেক্ষা করেন। অর্থাৎ নিজ থেকেই বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা একটু কমই।

এখন প্রশ্ন হলো, কখন বসকে বলবেন বেতন বাড়ানোর কথা? এ ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরার কোনো বিকল্প নেই। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করতে হবে। আর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পেতে হবে উৎফুল্ল মেজাজে, যখন সঠিক যুক্তি শোনার মুডে থাকবেন তিনি।

তবে বেতন বাড়ানোর কথা বলার আগে নিজের কর্মতৎপরতা জানান দেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে বিশেষ প্রকল্পের কাজে নিজ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতা রাখতে হবে। এতে করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারবেন যে আপনি প্রতিষ্ঠানের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। ফলে চূড়ান্ত মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও পেতে পারেন ভালো নম্বর।

স্বাভাবিকভাবে কর্তৃপক্ষ সেই কর্মীরই বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যাঁর নেতৃত্বের গুণাবলি আছে। তাই বলে অন্যদের যে পদোন্নতি হয় না, তা নয়। তবে নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন কর্মীদের ক্ষেত্রে সেটি হয় দ্রুত, মূল্যায়নও হয় আলাদা।

বেতন বাড়ানোর কথা বলার আগে নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে আত্মোপলব্ধি থাকা প্রয়োজন। আপনার বেতন বাড়ানোর দাবি যেন যৌক্তিক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু নেতিবাচক দিক থাকে, কর্মক্ষেত্রেও তা দেখা যায়। তাই নিজের ব্যাপারে সৎ থাকতে হবে। নেতিবাচক দিকগুলো শুধরে ইতিবাচকে পরিণত করতে হবে। বেতন বাড়ানোর বাহাসে এটি আপনাকে দেবে বাড়তি সুবিধা।

ধরুন সবকিছুই হলো। বেতন বাড়ানোর সপক্ষের সব যুক্তিই প্রবল বিক্রমে তুলে ধরলেন কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু তারপরও আপনার বেতন কমে যেতে পারে। কারণ, কর্তৃপক্ষের কাছেও তো কিছু পাল্টা যুক্তি থাকে। হয়তো বেতন বাড়লেও তা আপনার কাঙ্ক্ষিত হারে হলো না। তাই বলে হতাশ হয়ে বসে থাকলে তো ফায়দা নেই। মোদ্দা কথা, ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে বেতন বাড়ানোর কথা বলার আগে সবকিছুর জন্য প্রস্তুত থাকাটাই ভালো হবে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button