
এবিএনএ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আল্লাহ যদি আমাকে আবার ক্ষমতায় আনেন, তাহলে দেশের খেদমত করব। ক্ষমতায় না আনলে কোন আফসোস নেই। কারণ আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, জনগণের জন্য কাজ করি। তিনি বলেন, আমি একেবারে এতিম। আমরা দু’টি বোন আছি। আমাদের ছেলে মেয়েদের জন্য দোয়া করবেন। যেন আল্লাহ আমাদের ভালো রাখেন। সামনে নির্বাচন। সবাই দোয়া করবেন। আজ রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি আলেমদের শুকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ববোধ থেকে কাজ করি। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিশ্ব ইজতেমার জন্য টঙ্গীতে জায়গা দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আজকের কওমি আলেমরা সবচেয়ে বড় কাজ করেন। তারা এতিমকে আশ্রয় দেন, গরীবের ছেলে মেয়েদের আশ্রয় দেন। এর চেয়ে বড় কাজ আর কি হতে পারে। এতিমরা যেন আশ্রয় পায়, তারা পড়ালেখা করে যেন কোথাও দাঁড়াতে পারে আপনারা এই বড় কাজটা করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দ্বীন ইসলামের খেদমত করেন তারা কেন অবহেলিত থাকবেন। আমরা আইন করে মাস্টার্সের সমমান করে দিলাম। যেন এটা আর কেউ পরিবর্তন করতে না পারেন। আমরা ইমাম মোয়াজ্জিনদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করে দিয়েছি। তারা যখন ইচ্ছা সেখান থেকে সহযোগিতা নিতে পারেন।
তিনি বলেন, সমগ্র বাংলাদেশ ৫৬০ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার করে দিয়েছি। সৌদি বাদশার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বাংলাদেশে মজসিদ নির্মাণে সহযোগিতা করবেন। আমি চাই আমাদের দেশের সকলে এগিয়ে যাবে। এই জন্য আরবী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জায়গা দিয়েছি। আমার কারো প্রতি খারাপ চিন্তা না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কওমি মাদ্রাসা কারা সৃষ্টি করেছিল। যারা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তারাই কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেশের জন্য কাজ করছি। কারণ আমার বাবা এই দেশটাকে স্বাধীন করেছেন। বার বার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা বারবার আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। হয়তো আমাকে দিয়ে কিছু কাজ করাবেন বলে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অপপ্রচারে কান দিবেন না। আইনের প্রতি আস্থা রাখবেন। যাতে কেউ গুজব ছড়াতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মুসলিম দেশ মারামারি হানাহানি করে। লাভবান হয় যারা অস্ত্র তৈরি করে, তারা। কিন্তু
বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদের স্থান হবে না, মাদকের স্থান হবে না। যারা সন্ত্রাস তাদের কোন দেশ নেই, তাদের কোন ধর্মও নেই। থাকতে পারে না। প্রকৃত ইসলামে বিশ্বাসীরা জঙ্গী হতে পারে না বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া এদেশে ইসলাম বা হযরতমোহাম্মদ (সা.)-এর কুটূক্তিকারীকে বিচার করার কথাও বলেন তিনি। শোকরানা মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফি, সভাপতির পক্ষে লিখিত বক্তব্য রাখেন আল্লামা নূরুল আমিন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন- আল্লামা আশরাফ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা নুরুল ইসলাম প্রমুখ। এর আগে ১০ টা ৪৫ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন। উদ্যানে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান কওমি মাদ্রাসা শীর্ষ আলেমরা। পরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান মঞ্চে আসনগ্রহণ করেন। এর আগে মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী কওমি নেতাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। শুকরানা মাহফিল থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
Share this content: