বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

সমান সুযোগ না পেলে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা : ২০ দল

এবিএনএ: ভোটের অবাধ পরিবেশ ও সমান সুযোগ-সুবিধা না পেলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভোটে থাকবে কি না-সেই বিষয়ে ‘যথাসময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষষণা’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জোটের অন্যতম প্রধান নেতা কর্নেল (অব.) ড. অলি আহম্মেদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন তিনি। অলি আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন যে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর কোনো রাজনৈতিক মামলা দেওয়া যাবে না, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হবে না এবং গায়েবী ও মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি একথা বলার পরেও শত শত রাজনৈতিক ও গায়েবী মামলা হয়েছে এবং হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আসামি করে ঘর-বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। কোনো মামলা প্রত্যাহার হয়নি, কোন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ছাড়া পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা থাকার পরেও এখনও সরকার মনোনীত প্রতিনিধিরা বহাল তবিয়তে আছে। এসব অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে শুধু অন্তরায় নয় প্রচণ্ড বাধা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব এবং সেক্ষেত্রে ২০ দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না সেই বিষয়ে ২০ দল যথাসময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।’
বুধবার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে এলডিপির সভাপতি বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসা সারা দেশের হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়। এতে নারী কর্মীসহ বিএনপির ৬০ থেকে ৭০ জন মারাত্মক আহত হন। অনেকে টিয়ার গ্যাস ও গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়পত্র জমা দিতে যাওয়ায় তার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালসহ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনার পর পুলিশ তাণ্ডবে যখন কার্যলয়ের সম্মুখভাগ জনশূন্য তখন হেলমেট ধারী একদল যুবক এসে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে ও অগ্নিসংযোগ করে। এই হেলমেট বাহিনীই নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলনকারী কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল এবং কর্তব্যরত সাংবাদিদের মারপিট করেছিল। গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার যে ছবি পাওয়া গেছে সেই ছবির যুবকটি ছাত্রলীগ কর্মী বলে অনেকেই চিহ্নিত করেছেন।’
অলি আহমেদ প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কয়েকদিন ধরে ৪ হাজারেরও বেশি মনোনয়নপত্র বিক্রয় করেছে, জমা নিয়েছে। মিছিল করে প্রার্থীরা এসেছে। কেউ কেউ হাতি নিয়ে এসেছে এবং ঢাক-ঢোল বাজিয়ে এসেছে অনেকেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তখন কোনো নির্দেশ নামা জারি করেনি। প্রশাসন, পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি। কাউকে আহত কিংবা গেপ্তার করা হয়নি। তাহলে বিএনপির বেলায় নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশের অবস্থান ও আচরণ ভিন্নতর হলো কেন? সরকার এবং নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলে। এই কি তার নমুনা?’
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সরকারি অর্থ ব্যয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট তাকে জামিন দিলেও সরকারী প্রভাবে নিম্ন আদালত তাকে জামিন না দেওয়ায় তিনি মুক্ত হয়ে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন না। এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত।’ সংবাদ সম্মেলনে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button