এবিএনএ : তখনও ভালো করে ভোরের আলো ফোটেনি। এরই মধ্যে ঐহিত্যবাহী পোশাকে সেজে নদীর পাড়ে আসতে শুরু করেছে তরুণ-তরুণীর দল। সবার হাতেই নানা রঙের বাহারি ফুল। নতুন বর্ষকে বরণ করতে পাহাড় সেজেছে নতুন রূপে। তিন দিনব্যাপী বৈসাবি অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে নদীতে ফুল ভাসিয়ে শুরু করা হয়েছে আনুষ্ঠানিকতা। বুধবার (১১ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের দক্ষিণ খবং পুড়িয়া এলাকায় ফুল ভাসানোকে ঘিরে হাজারো মানুষের ঢল নামে। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে কেউ বন্ধুদের সঙ্গে কেউবা পরিবারের সঙ্গে এসেছেন ফুল ভাসাতে।
চাকমা ও ত্রিপুরারা উৎসবের প্রথম দিনে (বুধবার) সবার মঙ্গল কামনায় কলা পাতায় করে ভক্তিভরে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাহাড় থেকে সংগৃহীত ফুল দিয়ে সাজিয়েছেন ঘর। ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’ মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ ও চাকমাদের ‘বিজু’ উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে ‘বৈসাবি’।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে (১৩ এপ্রিল) চাকমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করে আপ্যায়ন করেন। প্রায় ৩০ পদের সবজি দিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ পাজন। নববর্ষের দিন গুরুজনদের বস্ত্রদান করা হয়। মন্দিরে মন্দিরে চলে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।
মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয় বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে। উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ জলকেলী। সকল দুঃখ ও পাপ ধুয়ে দিতে মারমারা একে অপরের দিকে পানি ছুড়ে মেতে উঠেন। তরুণ তরুণীরা ভালোবাসার মানুষটির দিকে পানি ছিটিয়ে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটায়। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিণত হয়েছে সব সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলায়। এদিকে এই উৎসব দেখতে খাগড়াছড়িতে বেড়েছে পর্যটকের সংখ্যা। বলা যায় উৎসবে রঙিন পার্বত্য চট্টগ্রাম।