
এবিএনএ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অধিকতর গবেষণার জন্য বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি যারা এখানে বিজ্ঞানী ও গবেষক আছেন আরো ভালো করে গবেষণা করুন যাতে আরো কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশি উৎকর্ষতা লাভ করতে পারে। তিনি বলেন, কোথায় কোথায় আমাদের আরো বেশি বিনিয়োগ করা দরকার সেইভাবেই আমাদের দেশের জলবায়ু, মাটি, পানি সবকিছু নিয়েই আপনাদের কাজ। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সবাই কাজ করবেন সেটাই আমি চাই। কারণ বিশ্বের সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে চলবো সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা কারো কাজ থেকে পিছিয়ে থাকবো না সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কারণ ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। তাঁদেরকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করতে হবে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান থেকে নিয়ে সর্বক্ষেত্রে আমি মনেকরি গবেষণাই হচ্ছে একমাত্র পথ। তিনি বলেন, এদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে ১৯৭৩ সালে এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) প্রতিষ্ঠা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথ ধরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে একটি প্রযুক্তিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ গড়তে বদ্ধপরিকর। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে টেকসই করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র গবেষণাই দিতে পারে আমাদের সেই পথ। তাঁর সরকার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি-২০১১ প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাতে করে আমাদের অর্থনীতি এবং প্রবৃদ্ধি অর্জনকে আমরা টেকসই করতে পারি, তার ওপর আরো ব্যাপকভাবে যাতে গবেষণা হয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যাতে যথাযথ ব্যবহার হয় সেইদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি। তিনি বলেন, ২০০১ সালে যখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল তখন সমস্ত স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছিল। অনেকে আধাআধি পড়ার পরই দেশে ফিরে আসলেন আবার অনেকে অনেক কষ্ট করে বিদেশের মাটিতে থেকে তাঁদের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করলেন, কিন্তু তাঁদের চাকরি ছেড়ে দিতে হলো।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের বিজ্ঞানী গবেষক যারা আছেন তাঁদের বিরাট অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। আপনারা আরো মনযোগের সঙ্গে নিজ নিজ কাজটি করবেন সেটাই আমার আশা। তিনি বলেন, আজকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সমগ্র বিশ্বে যে স্বীকৃতি আমরা আদায় করেছি সেই পথ ধরেই ২০২০ সালে যেমন আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো ঠিক তেমনিভাবে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠা করবো। এ দেশে আর তখন হতদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না। শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা জলবায়ু পরিবর্তন- এর প্রভাবে বাংলাদেশের যেন কোন ক্ষতি না হয়, বাংলাদেশের জনগণ যেন উন্নত জীবন পায় এবং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই দীর্ষমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। শতবর্ষ পর আমাদের যে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আসবে তাঁদের জীবন-যাত্রার মান কেমন হবে সেটা মাথায় রেখেই আমাদের এই পরিকল্পনা।
Share this content: