

এবিএনএ : গাজীপুরের টঙ্গী নতুনবাজার এলাকায় জামালপুর থেকে ঢাকাগামী কমিউটার ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে পাঁচ ঘণ্টা রেলপথ বন্ধ থাকার পর ঢাকা থেকে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার বেলা পৌনে ১টার দিকে ওই ট্রেনটির চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে চারজন নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৬ জন আহত হন। ওই দুর্ঘটনার পর লাইন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। টঙ্গীর স্টেশন মাস্টার হালিমুজ্জামান জানান, ঢাকা থেকে আসা রিলিফ ট্রেন এসে আপ লাই ক্লিয়ার করলে সেই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিয়া জাহান জানান, বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ঈশাখা এক্সপ্রেস ওই দুর্ঘটনার কারণে আটকে ছিল।
লাইন ক্লিয়ার হওয়ার পর বিকাল সাড়ে ৫টায় ট্রেনটি টঙ্গী অতিক্রম করে। দুর্ঘটনায় নিহত দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর গ্রামের সালামত বেপারীর ছেলে আমীর উদ্দিন (৩৫) ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের খোকন (৩৭)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা পৌনে ১টার দিকে ট্রেনটি টঙ্গী স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ সময় স্টেশন চত্বরে লাইন পরিবর্তনের সময় ট্রেনটির পেছনের চারটি বগি ছিঁড়ে ইঞ্জিন থেকে আলাদা হয়ে লাইনচ্যুত হয়ে স্লিপারে পড়ে যায়। এসময় ট্রেনের ছাদ ও ভেতর থেকে শত শত যাত্রী আগুন আগুন বলে চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে পড়ে। লাফিয়ে পড়ে যাত্রীদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়। টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হালিমুজ্জামান জানান, জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা কমিউটার ট্রেনটি টঙ্গী স্টেশন থেকে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য সিগনাল দেয়া হয়। স্টেশনের সীমানা অতিক্রম করার সময় ইঞ্জিন থেকে বগিগুলোর সংযোগ ছিঁড়ে আলাদা হয়ে পড়ে। এ সময় লাফিয়ে পড়ে যাত্রীরা হতাহত হয়।
টঙ্গী রেলওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, লাফিয়ে পড়ে তিনজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদ রানা জানান, গুরুতর আহতাবস্থায় সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল ও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাতজনকে টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতালেই ভর্তি এবং ১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দুপুর আড়াইটার দিকে রেলমন্ত্রী মজিবুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, নিহতদের আর্থিক সহায়তা করা হবে। আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হবে। দুর্ঘটনার ব্যাপার তিনি বলেন, রেলওয়ে বিভাগীয় পর্যায়ের তিন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পূর্ব) মিজানুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।