জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

কৃষিতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বকে অবাক করেছে: তথ্যমন্ত্রী

এবিএনএ: তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কৃষিখাতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বকে অবাক করেছে। আমাদের খাদ্য উৎপাদন গত ৫০ বছর চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শুধু বিশ্বকেই নয় বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকেও বিস্মিত করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ‘বিজয়ের ৫০ বছর : কৃষিখাতে অর্জন’ শিরোনামে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে আজ পৃথিবীর সামনে কেসস্টাডি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের যে দেশে মাথাপিছু কৃষি জমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন, মানুষের ঘনত্ব সর্বোচ্চ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যার নিত্যসঙ্গী, প্রতিবছর বন্যায় যে দেশের প্রায় অর্ধেক স্থলভূমি পানিতে তলিয়ে যায়, সেই দেশ এসব কিছু মোকাবিলা করে কিভাবে কৃষিতে বিস্ময়কর উৎপাদন বৃদ্ধিতে সক্ষম হয়েছে সেটি সত্যিই পৃথিবীর সামনে উদাহরণ।’

বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি সাজ্জদুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান তাদের আলোচনায় কৃষিখাতে দেশের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেন।

কৃষিতে বিস্ময়কর অর্জনের জন্য কৃষিবিদ ও আমাদের কৃষকদের অবদান উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কৃষিবিদরাই ফসলের উচ্চ ফলনশীল ও উপকূলে আবাদযোগ্য লবণাক্ততাসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলো আমাদের জন্য সম্পদ, পৃথিবীর জন্যও সম্পদ, যা না হলে আজ আমাদের পক্ষে এই অর্জন সম্ভবপর হতো না। বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম দেশ অথচ ধান উৎপাদনে চতুর্থ। মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনেও সপ্তম। নেপালে যখন ভূমিকম্প হলো আমরা ৩০ হাজার মেট্রিকটন চাল দিয়েছি। এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভবপর হয়েছে।’

সতর্কবাণী উচ্চারণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃষিজমির পরিমাণ গত ৫০ বছরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে। অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি-কলকারখানার কারণে এটা হয়েছে। এখন ৩০ শতাংশ মানুষ নগরবাসী, ১৫ বছর পর তা প্রায় ৫০ শতাংশ হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জমির উৎপাদন ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। দেশে প্রতিবছর এক শতাংশ হারে কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। বিশ বছর পর আমাদের সব উদ্ভাবন কাজে লাগিয়েও আজকের মতো উৎপাদন যে সম্ভবপর হবে না তা সবার ভাবা প্রয়োজন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নগর কৃষিকে মূলধারার কৃষির সঙ্গে যুক্ত করে কৃষি উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন। এ বিষয়ে কৃষিবিদ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম সাহেবের পরামর্শ আমাদের এগিয়ে নেবে।’ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম তার বক্তৃতায় কৃষিকে প্রাকৃতিকভাবে সবুজ এই দেশের সবচেয়ে বড় ভিত হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে টেকসই ও যুগোপযোগী কৃষি অর্থনীতির বিকল্প নেই।’

Share this content:

Back to top button