লাইফ স্টাইললিড নিউজ

শিশুকে নিউমোনিয়া থেকে বাঁচাতে…….

এবিএনএ : অন্য সময়ের চেয়ে শীতের আবহাওয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে একটু বেশিই চিন্তা করেন অভিভাবকরা। নিজের আদুরে শিশুটিকে সুস্থ রাখতে চোখের ঘুমও হারাম করেন অনেক বাবা-মা।শীতে শিশুর শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে।
নিউমোনিয়া একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগ হতে পারে যে কোনো বয়সেই। তবে শিশুদের বেশি হয়। রোগটিতে প্রথমে সর্দি-কাশির মতো সাধারণ উপসর্গ থাকে, যা পরে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। নিউমোনিয়া সব বয়সই হয়। তবে নিউমোনিয়ার কারণে কখনও শিশুর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠতে পারে। সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যেই নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেশি থাকে। নিউমোনিয়া হলে শিশুর ফুসফুস মারাত্মক সংক্রমণের শিকার হয়।
নিউমোনিয়া কী?
ফুসফুসের এক ধরনের ইনফেকশনের নাম নিউমোনিয়া। এটি সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহের জন্য হয়ে থাকে, যা ইংরেজিতে বলা হয় রেসপাইরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশন (Respiratory tract Infection)। এই প্রদাহ যখন জীবাণুঘটিত বা সংক্রমণজনিত হয়ে রোগ তৈরি হয়, তখন এটিকে নিউমোনিয়া বলে।
শীতে শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি থাকে। শীত ঋতুতে শিশুদের নিউমোনিয়া থেকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মানিককুমার তালুকদার।
ডা. মানিককুমার তালুকদার বলেন, শীতে নিউমোনিয়া থেকে শিশুদের বাঁচাতে অভিভাকের ভূমিকাই হবে প্রধান। বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে সবার আগে। অন্য সময়ের চেয়ে শীত সময়ের একটু বেশিই যত্ন নিতে হবে।
শিশুকে নিউমোনিয়া থেকে বাঁচাতে করণীয়
নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন
নিউমোনিয়ার কিছু ভ্যাকসিন বের হয়েছে। ভ্যাকসিনগুলো যদি সময়মতো নেওয়া যায়, তা হলে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যায়। তবে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু থেকে দূরে রাখা
আপনার শিশুকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর কাছে থেকে দূরে রাখেতে হবে। নিউমোনিয়ায় সংক্রমণ ব্যাধি হওয়ায় আক্রান্ত শিশুর কাছ থেকে দূরে থাকা ভালো।
হাঁচি-কাশি
হাঁচি-কাশি আক্রান্ত লোকের সামনে থেকে শিশুদের দূরে রাখুন। সব সময় ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাতে হবে। বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা। এ ছাড়া খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
শিশুকে বাইরে নেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা
শীতকালে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেশি থাকে। শিশুকে ভিড়ের মধ্যে অর্থাৎ বেশি লোক সমাগমের মধ্যে যেতে না দেওয়া। যেমন- শপিংমল, সিনেমা হল, বাস ইত্যাদি এড়িয়ে চলা।
পুষ্টির মাধ্যমে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ
বয়স ছয় মাসের কম এমন শিশুরা যদি বুকের দুধ পান করে, তবে সে নিউমোনিয়ার জীবাণু অনেকটাই প্রতিহত করতে পারবে। যে শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি, তাদের যদি বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার হিসেবে দেশীয় খাবার, যেমন- খিচুড়ি, দেশি ফলমূল, শাকসবজি খাবারের মাধ্যমে শিশুর পুষ্টি ঠিক রাখা যায়। তবে নিউমোনিয়ার জীবণু প্রতিহত করার ক্ষমতা আরও বাড়বে।
অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত
শিশু যদি অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়, ঘন ঘন নিউমোনিয়া হয়। তাই শিশুর পুষ্টির দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
গোসলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার
শীতে শিশুকে নিউমোনিয়ার হাত থেকে বাঁচতে গোসলের সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। গোসলের সময় স্যাভলন, ডেটল বা এ ধরনের জীবাণুনাশক দেয়া উচিত নয়।
ময়েশ্চারাইজ
শীতে শিশুর ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজ ব্যবহার আবশ্যক। গোসল করানোর পর কোমল টাওয়েল দিয়ে শরীর মোছার পর অলিভ অয়েল ও ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ তেল গায়ে মাখতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে- লাগানো তেল বা লোশন যেন সুগন্ধি, অ্যালকোহল এবং অন্যান্য কেমিক্যালমুক্ত হয়।
ডায়াপার পরিবর্তন
শীতে শিশুদের ডায়াপার ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হবে। ভেজা ডায়াপার দীর্ঘক্ষণ পরে থাকলে শিশুর অ্যালার্জির সমস্যাও হতে পারে।
ঠাণ্ডায় নাক বন্ধ হলে
ঠাণ্ডা লেগে অনেক সময় শিশুর নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একে ক্ষেত্রে ‘নরসল নসল ড্রপ’ দিনে দুবার দেওয়া যেতে পারে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button