এ বি এন এ : জেমস কনোলি শুরু করেছিলেন ইতিহাস নির্মাণ। ১৮৯৬ সালে এথেন্স অলিম্পিকে ট্রিপল জাম্প ইভেন্টে তিনিই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রকে এনে দিয়েছিলেন সোনার পদক। কনোলির প্রথম স্বর্ণ-কীর্তির ১২০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র পেল অলিম্পিকে তাদের ইতিহাসের ‘হাজারতম’ সোনার পদক। ক্যাথলিন বেকার, লিলি কিং, ডানা ভোলমোর আর সিমোন ম্যানুয়েল নামের চার নারী সাঁতারু নিজেদের কনোলির মতোই করে রাখলেন অমর। এই চার নারী সাঁতারুর মিডলে রিলে জয়েই তো অলিম্পিকে ১০০০ সোনার গৌরব যুক্তরাষ্ট্রের।
অলিম্পিক ইতিহাসে ৯৭৭টি সোনা নিয়ে এবার রিও’তে পা রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবারই ১০০০ তম সোনা জিতে নেওয়ার প্রত্যাশাটা খুব বাড়াবাড়ি কিছু ছিল না। এখনো পর্যন্ত ২৩টি সোনা জিতে বেশ সহজেই ১০০০ তম সোনার মাইলফলক ছুঁয়েছে তারা।
এই ১০০০টি অলিম্পিক সোনার ৩২৩টি এসেছে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ইভেন্টে, ২৪৬টি সাঁতারের বিভিন্ন ইভেন্টে। বাকি ৪৩১টি সোনা এসেছে ৩৮টি বিভিন্ন ধরনের খেলা থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সংস্কৃতির বৃহত্তর ছবিটাই ফুটে ওঠে তাদের এই অর্জন থেকে।
১০০০ তম সোনার জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সংস্কৃতির কথাই বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক কমিটির প্রধান স্কট ব্ল্যাকমান, ‘এটা দুর্দান্ত একটা অর্জন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সংস্কৃতির কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। যে সংস্কৃতি যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক ক্রীড়াদল গড়ে ওঠার মূল ভিত্তি।’
অলিম্পিক সোনা জয়ে রীতিমতো প্রতিদ্বন্দ্বীহীন যুক্তরাষ্ট্র। সোনা জয়ের লড়াইয়ে তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েত ইউনিয়নের (৩৯৫ সোনা) কোনো অস্তিত্বই নেই পৃথিবীর মানচিত্রে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে তৈরি হওয়া রাশিয়ার অলিম্পিক সোনার সংখ্যা—১৩৮ টি। সে হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিকটতম’ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ধরা যেতে পারে ২৪৩টি সোনা পাওয়া গ্রেট ব্রিটেনকে। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে যারা পিছিয়ে আছে ৭৫৭টি সোনায়। এর পরের অবস্থানগুলোতে আছে যথাক্রমে চীন (২১৪টি সোনা), ফ্রান্স (২০৭টি সোনা), ইতালি (২০২টি সোনা), জার্মানি (১৮০টি সোনা), হাঙ্গেরি (১৭২টি সোনা) ও সুইডেন (১৪৪টি সোনা)।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অলিম্পিকে ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি সোনা জিতেছেন মাইকেল ফেল্প্স—২৩ টি। ৯টি সোনা নিয়ে এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন মার্ক স্পিটজ ও কার্ল লুইস। ৮ সোনা আছে তিনজনের—জেনি টম্পসন, ম্যাট বিয়োন্দি ও রে ইউরির। রায়ান লকতে, অ্যামি ভ্যান ডাইকিন জিতেছেন ৬টি করে সোনা। ৫ সোনা আছে কার্ল ওসবার্ন, গ্যারি হল, অ্যারন পিয়ারসোল, নাথান অ্যাড্রিয়ান, টম জাগের, উইলস এলি, অ্যান্টন হেইডা ও কেটি লিডেকিসহ অনেকেরই। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে একাধিক সোনাজয়ী অ্যাথলেটের তালিকাও পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে বাধ্য।