এবিএনএ : মাহমুদ উল্লাহর হাতে যাদু আছে! রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে সেদিন শেষ ওভারে ৪ বলে ৩ উইকেট নিয়ে ৩ রানে জিতিয়েছেন খুলনা টাইটান্সকে। এবারো শেষ ওভারেই তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংসের হাত থেকে জয়টা ছিনিয়ে নিলেন। এবার ৫ বলে নিলেন ৩ উইকেট। শেষ ওভারে জেতার জন্য ৬ রান করতে পারলো না চিটাগং। টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারলো তারা মাহমুদ উল্লার অবিশ্বাস্য কীর্তিতে। আরেকটি রোমাঞ্চকর শেষ ওভারে ফল নির্ধারিত ম্যাচ মাত্র ৪ রানে জিতে উৎসবে মাতলো খুলনা। ম্যাচের সেরা মাহমুদ উল্লাহই।
মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১২৭ রান করেছিল খুলনা। মোহাম্মদ নবির এই ম্যাচে নায়ক হওয়ার কথা। ৩ উইকেট নিয়েছিলেন আগে। পর এই আফগান দলকে হারের মুখ থেকে জয়ের দরজায় নিলেন। কিন্তু শেষ বলে জিততে দরকার ছিল ৫ রান। নবি তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। ২৩ বলে তার দারুণ ৩৯ রানের ইনিংসটা শেষ হলো হারের হতাশায়। ৯ উইকেটে ১২৩ রান তাদের।
খুলনা জানতো, বিতর্কে পড়া মিরপুরের উইকেটে বোলাররা চেপে ধরলে চিটাগংয়ের জন্য এই টার্গেটও কঠিন হবে। হচ্ছিলোও তাই। শফিউল ৪ উইকেট নিলেন। কেভন কুপার ২ উইকেট। ১৫.১ ওভারে ৬ উইকেটে ৭৮ রান চিটাগংয়ের। কিন্তু নবি ও চতুরঙ্গা ডি সিলভা (১৯) মিলে ৪৫ রানের জুটি গড়লেন। শেষ ওভারে আর ৬ রান তো করাই যায় সহজে।
কিন্তু ওই নাটকীয় ওভারের প্রথম বলে নবি ১ রান নিলেন। পরের বলে চতুরঙ্গা আউট। ওটা মাহমুদ উল্লাহর তৃতীয় ওভার। আগের ২ ওভারে ২৩ রান দিলেও উইকেট পাননি। কিন্তু এবার ১ রানে ৩ উইকেট! তার তৃতীয় বলে রাজ্জাক রান পেলেন না। পরের বলটি ফিল্ডারের হাতে তুলে দিয়ে ফিরলেন। নবি নিয়েছেন স্ট্রাইক। ২ বলে ৫ লাগে। কিন্তু ব্যাটে বলে হলো না। শেষ বলে নিরুপায় হয়ে মাহমুদ উল্লাহকে তুলে মেরে নবি আউট। মাহমুদ উল্লাহর হাতে তো যাদুই আছে!
তামিম (৩) ও ডোয়াইন স্মিথ (৩) দলের ২০ রানের মধ্যে কেভন কুপারের শিকার হয়ে ফেরেন। কুপার গত আসরের সেরা উইকেট শিকারী। এট ছিল তার প্রথম ম্যাচ। পরের ৩ ওভারে শোয়েব মালিক (৪), এনামুল হক (১৪) ও জাকির হাসান শফিউলেন শিকার। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে ভয় দেখানো জহুরুল ইসলাম (২৫) তার শিকার। শফিউলের বাকি ৫ বলে ১৪ রান নিয়ে নবি ম্যাচটাকে সহজ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নবি পারেননি। শফিউল বা নবির যে কেউ হতে পারতেন ম্যাচের সেরা। মাহমুদ উল্লাহ সবই বদলে দিয়েছেন।
প্রথম ম্যাচে ১৩৩ রান করেও জিতেছে খুলনা। পরের ম্যাচে বিপিএলের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৪ রানে অল আউট মাহমুদ উল্লাহরা! এবার টেনেটুনে ১২৭! ওপেনার রিকি ওয়েসেলসের (২৮) পর তিন ব্যাটসম্যান ব্যর্থ। মাহমুদ উল্লাহ নিজে করেছেন ৬। অল কাপালি (২৩), নিকোলাস পুরান (২৯), আরিফুল হক (অপরাজিত ২৫) লড়ার পুঁজি দিয়েছিলেন। তারপরও জেতে না খুলনা। শেষ ওভারে মাহমুদ উল্লাহকেই লাগে। কিন্তু খুলনার জন্য আতঙ্কের ব্যাপার হলো, রোজ রোজ কি আর এমন নাটকীয় ঘটনা ঘটবে!
– See more at: http://www.kalerkantho.com/online/sport/2016/11/12/428145#sthash.QZM6AXkc.dpuf