
এবিএনএ : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন করছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক। সরকারের উচিত তাদের দাবি মেনে নিয়ে কোটা কাঠামোর সংস্কার করা। সোমবার এ তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ড. ইকবাল বলেন, আমি কোটার বিরোধী নই। কিন্তু আমি যা শুনেছি তা হলো বর্তমানে মেধাবীদের থেকে বিভিন্ন জায়গায় কোটাপ্রাপ্তদের সংখ্যা বেশি। চাকরির ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ থেকে শুরু করে এর অধিক কোটা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। এই অনুপাতটাকে কমিয়ে আনা প্রয়োজন। তা না হলে মেধাবীদের মূল্যায়ন হবে না।
তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবনের কথা না ভেবে আমাদের একটি দেশ উপহার দিয়েছেন। অথচ তারাই একটা বিরাট সময় ধরে অবহেলিত ছিলেন। তাদের জীবনযাত্রার মান সবার থেকে ভালো হোক আমরা সবাই চাই। জাফর ইকবাল বলেন, তবে তাদের সুবিধা দিতে গিয়ে আমরা যেন তাদের অসম্মানিত না করি। এই যে আজকে কোটায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, যার ফলে মনে হচ্ছে আমরা তাদের অপমানিত করছি। অথচ তাদের অসম্মানিত করার এ সুযোগটা আমরা নিজেরাই তৈরি করে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে কোটা ছিল না। এখন বিভিন্ন রকম কোটা চলে আসছে। কোটা যত কম থাকা যায় ততই ভালো। আর একটি কোটা শুধু জীবনে একবারই ব্যবহার করার সুযোগ থাকা উচিত বলে মনে করেন দেশবরেণ্য এই লেখক। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের নির্যাতনের ব্যাপক সমালোচনা করে তিনি বলেন, পুলিশের কোনোভাবেই উচিত হয়নি শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা। আমার সঙ্গেও পুলিশ থাকে, তাই এর সমালোচনা করাটা একটু কঠিন।
ড. জাফর বলেন, তবে আগে আমরা দেখতাম ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকতে গেলে প্রক্টরের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। প্রক্টরের অনুমতি পেলে পুলিশ ঢুকতে পারত। এখন বিভিন্ন ক্যাম্পাসে পুলিশের স্থায়ীভাবে ক্যাম্প করে দেয়া হচ্ছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক ক্ষতিকর একটি বিষয়। জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা না করে পুলিশ বিষয়টাকে অন্যভাবে সমাধান করতে পারত। ড. জাফর বলেন, যারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাবঞ্চিত তাদের সুযোগ করে দিতে গিয়ে যদি উল্টো তাদের অসম্মান করি তাহলে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের বিষয়টা মনে রাখা উচিত শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে নয় বরং কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করছেন।
Share this content: