এবিএনএ : লাইফস্টাইলবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে বিবাহিত জীবনের কিছু বিষয় তুলে ধরা হয় যেগুলো মূলত সুখের সংসারে ফাটল ধরাতে পারে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই দাম্পত্য জীবন সুখের রাখতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। সাধারণ ভুলগুলো দুজনেরই এড়িয়ে চলার জন্য রয়েছে কিছু উপায়।
অনিচ্ছায় রাজি হওয়া: যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিবাহ বিষয়ক পরামর্শক ও ‘ব্লুপ্রিন্ট ফর এ লাস্টিং ম্যারেইজ’ বইয়ের লেখিকা লেসলি ডোরেস বলেন, “ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কিছু করতে রাজি হওয়াই মনের ভেতর অসন্তোষের বীজ বপন করে। আর অসন্তোষ সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণ।”
ডোরেস এক্ষেত্রে পরামর্শ দেন যৌথ সম্মতির ভিত্তিতে কাজ করার।
“দুজন একমত না হয়ে কোনো কাজেই হাত দেবেন না। অর্থাৎ, কমপক্ষে দুটো ‘হ্যাঁ’ ভোট পেলে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এখানে একটি ‘না’ ভোটের অর্থ হচ্ছে, হয় পরিকল্পনাটি বাতিল করুন নতুবা যতক্ষণ না যেসব সমস্যার কারণে এই সিদ্ধান্ত সঙ্গীর কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না ওই কারণগুলো সমাধানের চেষ্টা করুন।”
প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব: নিজেদের ভিতরে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ এবং তুলনা করার অভ্যাস দাম্পত্য জীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ডোরেস বলেন, “এই অভ্যাস পরস্পরকে এমনভাবে মুখোমুখি দাঁড় করায় যেন তারা জীবনসঙ্গী নন, শত্রু।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রবণতার কারণে আপনি শুধু নিজের বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দিতে থাকেন। ফলে সঙ্গীর অবদান অবহেলা করতে শুরু করেন।”
তাই বিবাহিতজীবনের দায়িত্বগুলো সমানভাবে ভাগাভাগি করার চেষ্ঠা না করে বরং নিজ অবস্থান থেকে শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত। নিজেদেরকে ভাবুন একটি দল হিসেবে, জয়-পরাজয় যাই আসুক, বরণ করতে হবে একসঙ্গে।
নিয়মিত একসঙ্গে সময় না কাটানো: ‘চোখের আড়াল, মনের আড়াল’ এই প্রবাদটি বেশ প্রচলিত। প্রতিদিন একসঙ্গে যথেষ্ট সময় না কাটানো হতে পারে দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতির কারণ।
পরস্পরের প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দৈনিক অন্তত একঘণ্টা একসঙ্গে সময় কাটানোর পরামর্শ দেন ডোরেস।
তিনি বলেন, “এর ফলে পরস্পরের প্রতি কৌতূহল ও আগ্রহ বজায় থাকে। মাঝে মাঝেই পুরানো দিনের মতো দুজন ঘুরে আসতে পারেন শহরের বাইরের কোনো জায়গা থেকে। অথবা ব্যস্ত দিনের পর রাতের খাবার খেতে পারেন পছন্দের কোনো রেস্তোরাঁয়।”
পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও উদারতা না দেখানো: মানুষ প্রায়ই অচেনা লোকের প্রতিও যথেষ্ট ন¤্র আচরণ করে যতটা না করে নিজের সঙ্গীর প্রতি। এর কারণ হচ্ছে, যে মানুষটির সঙ্গে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা বসবাস করছে, তাকে ছোট্ট একটি ধন্যবাদ দেওয়ার কথা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই। “কিন্তু এটি মোটেও ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ নয়।”, বলেন ডোরেস।
এক্ষেত্রে তিনি পরামর্শ দেন, “সে যে আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ এটুকু বুঝতে দিতে কখনও কার্পণ্য করবেন না। সময় পেলেই আপনার সঙ্গীর কাছে জানতে চান, তার কিছু লাগবে কিনা। সে যখন ঘুমিয়ে থাকে চেষ্টা করুন শব্দ কম করতে, যেন তার ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে। একজন মানুষ হিসেবে তার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন।”
সংসার গুরুত্ব না দেওয়া: এটা ঠিক যে, কেবল পারিবারিক জীবনের বাইরেও আপনার অনেক কিছু সামলে চলতে হয়। এর জন্য দাম্পত্য জীবনকে কম গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়।
ডোরেস বলেন, “সময় কাটানোর ব্যাপারে পরিবারকে গুরুত্ব দিন সবার আগে। পরিবারের সঙ্গে যথেষ্ট সময় না কাটানো মানে এই যে, সংসারকে আপনি তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কর্মক্ষেত্র, পরিবার আর নিজের মধ্যে যথেষ্ট ভারসাম্য বজায় রাখা, কিছুটা কঠিন হলেও অসম্ভব না। সুখী দাম্পত্য জীবন ও সংসার চাইলে অবশ্যই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো উচিত।