এবিএনএ : কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, ‘ময়মনসিংহ-৬ আসনের সংসদ সদস্য (আওয়ামী লীগের) অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন রাজাকার ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এমপিও হয়েছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে যাননি। তাকে ধরার জন্য ১০ বার লোক পাঠিয়েছিলাম।’
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ পরিদর্শনে এসে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে বলেছি, আপনারা এত রাজাকারের বিচার করেন- ফুলবাড়িয়ার রাজাকার এমপি মোসলেমের বিচার করেন না কেন।’
ধর্মমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বঙ্গবীর আরও বলেন, ‘আমি এখান থেকে যেতে না যেতেই রাজাকার এমপি মোসলেমের নামে একটি যুদ্ধাপরাধের মামলা করবেন। আমি জীবনে কারও নামে মামলা করিনি। কোনো মামলায় সাক্ষ্য দেইনি। এবার আমি একজন রাজাকার এমপির বিরুদ্ধে সাক্ষী হতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এত লম্ফঝম্ফ করবেন না। যাদেরকে নিয়ে লাফালাফি করছেন তারাই কিন্তু আপনাকে মারার জন্য বিমানের তেলের পাইপ খুলে রেখেছিল। পুলিশ নাকি বিনা ভোটে আপনাকে গদিতে বসিয়েছে। সেই পুলিশ তো মানুষ হত্যা করবেই। এই দেশ এখন পুলিশি রাষ্ট্র হয়ে গেছে। রাজনীতি নেই, বিরোধী দল নেই। আর বেশি দিন নেই, পুলিশই আওয়ামী লীগারদের পিটিয়ে হত্যা করবে।’
ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ আন্দোলনে পুলিশের লাঠিপেটায় শিক্ষকসহ দু’জন নিহতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, ‘যতদিন কলেজ সরকারিকরণের দাবি আদায়সহ হত্যার বিচার না হবে, ততদিনই তিনি জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনদেশ। এ দেশের একটা ছাগল পিটালেও বিচার হওয়া উচিত। অথচ একজন শিক্ষক ও জনতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ। আমি কী এই স্বাধীনতার জন্য রক্ত ঝরিয়েছি? এসব যখন মনে হয়, তখন ক্ষোভে ফেটে পড়তে ইচ্ছা করে। আমি যদি মুসলমান না হতাম, অনেক আগেই আত্মহত্যা করতাম।’
এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতার লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক, যুগ্ম-সম্পাদক সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী, জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুর রশিদ, ফুলবাড়িয়া উপজেলা সভাপতি কাজী ইমান আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, ফুলবাড়িয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবি সিদ্দিক ও জেলা ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনসহ দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনতা উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এমন বাংলাদেশ হবে আগে জানলে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতাম না।’