এবিএনএ : জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বলেছেন, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় কোনো দিক থেকেই গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না সরকার। এতে আওয়ামী লীগের দুর্নাম বাড়ছে, সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের এখন স্লোগান আমার ভোট আমি দেবো, তোমার ভোটও আমি দেবো।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এরশাদ বলেন, দেশে সবচেয়ে সস্তা এখন মানুষের জীবন। মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। কোথায় মরে, কোথায় গুম হয়, তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই মৃত্যুর মিছিল কবে যে শেষ হবে একমাত্র আল্লাহই জানেন !
এরশাদ অভিযোগ করে বলেন, দেশে একের পর এক ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটলেও, একটিরও বিচার হয়নি। কারণ এর সঙ্গে সরকারের আত্মীয়-স্বজন জড়িত। সোনালী, বেসিকসহ কয়েকটি ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি টাকা লুট হলো, অথচ কোনো বিচার হলো না। এই টাকা সরকারের নয়, এই টাকা জনগণের টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাট প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, হ্যাকিংয়ের কথা বলা হলেও, আসলে হ্যাকিং হয়নি। লুটপাট করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তার আঙ্গুলের ছাপ ছাড়া এই টাকা উঠানো সম্ভব নয়। এই ছয়জন মানুষ বাংলাদেশের। তাদের পরিচয় আমরা এখনো জানতে পারিনি।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে এরশাদ বলেন, এই দলটির প্রতি মানুষের আর কোনো গ্রহণ যোগ্যতা নেই। তারা তিন মাসের আন্দোলনে অনেক মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তারা এক সঙ্গে মা-মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। মানুষের কাছ থেকে বিএনপি এখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব কারণে দলটির প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। তাই জাতীয় পার্টিই এখন মানুষের শেষ ভরসা। দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে শক্তিশালী করে আগামীতে ক্ষমতায় আসবে।
কলেজছাত্রী তনু হত্যার প্রসঙ্গ টেনে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, শোনা যাচ্ছে তনুকে ধর্ষণ করা হয়নি। তাহলে মেয়েটিকে হত্যা করা হলো কেন ? তনু হত্যার আসল তদন্ত প্রতিবেদন কোন দিনও পাওয়া যাবে না। তনুর মায়ের কান্নাও কখনো থামবে না। তবে তনুর মায়ের চোখের পানিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠবে।
তিনি বলেন, ধর্ষণের কারণেই দেশে বাল্য বিয়ের প্রবণতা বাড়ছে। কোনো নিরাপত্তা নেই, এ কারণে অভিভাবকরা অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।
এরশাদ দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া এই দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি আগামীতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে দেশের উন্নয়ন করবে।
জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত সম্মেলনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মানিকগঞ্জ জেলা জাপা সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, যুগ্ম-মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন খান প্রমুখ।