বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

সিলেটে মাঠের আগে ঘরের লড়াইয়ে আরিফ-কামরান

এবিএনএ : ভোটের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী হাওয়া বইছে সিলেট নগরে। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে নানা চুলচেরা বিশ্লেষণ। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বারবার ঘুরেফিরে আসছে বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী এবং সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নাম। এই দুই প্রার্থী ২০১৩ সালেও লড়েছিলেন। সে সময় জয় ছিনিয়ে নেন আরিফুল। এবারও লড়াইয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন দুই জন। তবে একে অপরের মোকাবেলার আগে দুই নেতাকেই সামলাতে হচ্ছে নিজের ঘর। দুই দলেই মনোনয়ন পাওয়ার জন্য একাধিক নেতা আগ্রহী। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সীমা অনুযায়ী ৩০ জুলাই হবে ভোট।

আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান দাবি করেছেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে প্রার্থী করার ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন। এরপর তিনি জোরেশোরে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন। অবশ্য গত নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হারার পরও মাঠছাড়া ছিলেন না তিনি। তবে নৌকা প্রার্থীকে মনোনয়নে আগ্রহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও টানা তিনবারের সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। কামরান গত নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই মাঠে সক্রিয় অবস্থান ধরে রেখেছেন আসাদ। তিনি বলেন, ‘মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছি। আমার একটা শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে। দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে আমাকে নিশ্চয়ই মূল্যায়ন করা হবে।’ কামরান বলেন, ‘মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি মানুষের জন্য কাজ করি। গত নির্বাচনে হারলেও সবসময় আমি নগরবাসীর পাশে থেকেছি। বৃহৎ দল হিসেবে আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারে। কিন্তু দল অভিজ্ঞতা, কর্মতৎপরতা, মানুষের চাওয়া সবকিছুকে মূল্যায়ন করেই মনোনয়ন দেবে।’

বিএনপি থেকে এবারও আরিফুল হক চৌধুরী মনোনয়ন পাবেন, এমন গুঞ্জন জোরাল। গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে নির্বাচনের জন্য তিনিও ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়ার দাবি করেছেন তিনি। গত নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হওয়া আরিফ প্রায় দুই বছরই কারান্তরীণ ছিলেন। বাকি সময়ে প্রতিশ্রুত উন্নয়নকাজের সিংহভাগই শেষ করেছেন বলে দাবি তার। দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিমত, আওয়ামী লীগ থেকে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মনোনয়ন পেলে তার বিপক্ষে টেক্কা দিতে বিএনপি থেকে শক্ত অবস্থান আছে আরিফের। অবশ্য মেয়র পদে নির্বাচন করতে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও টানা তিনবারের সিটি কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী আছেন মেয়র পদে নির্বাচন করার দৌড়ে। নাসিম হোসাইন বলেন, ‘নির্বাচন করতে সবাই আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। দল চাইলে আমি প্রস্তুত আছি।’ বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য গত এক বছর ধরে কাজ করে চলেছি আমি। সিলেটকে তিলোত্তমা হিসেবে গড়ে তুলতে আমার নিজস্ব কিছু পরিকল্পনাও আছে। দল মূল্যায়ন করলে আমি নির্বাচন করব।’

মেয়র আরিফুল বলেন, ‘মানুষের রায় নিয়ে গত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলাম। বাকি সময়ে প্রতিশ্রুত উন্নয়নকাজ শেষ করার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি দলীয় কাজেও সময় দিয়েছি। দল নিশ্চয়ই এসব বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে।’ গত নির্বাচনের তুলনায় সিলেট সিটি করপোরেশনে এবার ভোটার বেড়েছে ৬৭ হাজার ৯৬০ জন। ২০১৩ সালে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯১ হাজার ৪১ জন। তবে এবার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫৯ হাজার ১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯১ হাজার ৬০৯ জন এবং মহিলা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯২ জন।

Share this content:

Back to top button