লাইফ স্টাইললিড নিউজ

সেহরীতে কী খাবেন, কী খাবেন না

এবিএনএ : পবিত্র রমজান মাস।  এ মাসে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা রাখেন এবং ইবাদত করেন।

রমজানে কোভিড-১৯ এর কথা মাথায় রেখে এবং আমাদের সকলের সুস্থতার জন্য চাই একটু বাড়তি সতর্কতা।  এ মাসে খাদ্যাভ্যাস এমন হওয়া প্রয়োজন যেন আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি খাবার থেকে পাই এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

রমজানের সময় এমনিতেই আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে পরিবর্তন আসে এবং অনেকে পানিশূণ্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি, বুকে পেটে ব্যাথা, বদ-হজম সহ নানা জটিলতায় ভোগেন।  তবে খাবার গ্রহণে কিছুটা সতর্কতা ও নিয়ম মেনে চললে অনেক স্বাস্থ্যগত সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

ইফতার, রাতের খাবার ও সেহেরীর প্রতি সমান গুরুত্ব দেয়া একান্ত প্রয়োজন। অনেকে সেহেরীর সময় শুধু পানি, খেজুর খেয়ে রোজা রাখেন। পানি, খেজুর আমাদের শরীরের জন্য অবশ্যই ভালো। তবে এই দুটো জিনিস আমাদের সারাদিনের শক্তি সরবরাহের জন্য যথেষ্ট নয়। কেমন হবে সেহেরীর খাবার চলুন জেনে নেই।

এই সময়ের খাবারে জটিল শর্করা যেমন- লাল চাল, লাল আটা, ওটস, বার্লি, শস্য দানা খেলে অনেক সময় পর্যন্ত শক্তি পাওয়া যায়।  কেননা এই জাতীয় খাবার ধীরে হজম হয় এবং সময় নিয়ে রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ করে।

সেহেরীতে প্রোটিন জাতীয় খাবার অবশ্যই রাখতে হবে।  প্রথম শ্রেণির প্রোটিন যেমন- মাছ,মাংস, ডিম, দুধ এই ধরণের খাবার খেতে হবে।

রোজায় ডাল জাতীয় খাবার পরিমাণে বেশি খাওয়া হয় বলে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের দিকে একটু খেয়াল রাখতে হবে।

প্রাণি থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন হাই বায়োলজিক্যাল ভ্যালু সম্পন্ন হওয়ায় এটি অধিক সময় আমাদের কর্মক্ষম রাখে এবং শরীরের ক্ষয় পূরণ করে।

সেহেরীতে আঁশ সমৃদ্ধ খাবারকে বেছে নিতে হবে। আঁশ সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে বিভিন্ন শাক-সবজি রয়েছে। রঙিন ও পানি জাতীয় সবজি (লাউ, পটল, পেঁপে, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, টমেটো, চালকুমড়া, ক্যাপ্সিকাম, বীট, গাজর, ইত্যাদি) পাকস্থলিতে উত্তেজনা কমায় এবং সহজে হজম হয়। তাই মিশ্র সব্জিও সেহেরীতে রাখতে পারেন। তবে যারা সেহেরীতে তরকারি জাতীয় খাবার খেতে চান না তারা দুধ, কলা, আম দিয়েও খেয়ে নিতে পারেন।  সেই সঙ্গে বিভিন্ন ড্রাই ফ্রুট যেমন কিসমিস, কাঠবাদাম, খেজুর (১/২ টি)-ও এসময় খাওয়া যায়। এগুলো শরীরে শক্তি সরবরাহ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, শ্বাস-তন্ত্রের জটিলতা দূর করে, হজমে সহায়তার পাশাপাশি হার্ট ভালো রাখে।
ইফতার থেকে সেহেরী পর্যন্ত সারা দিনের বরাদ্দকৃত ১.৫-২ লিটার পানি পান অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।  তবে সেহেরীতে একবারে অনেকটা পানি খাওয়া ঠিক নয়। কোনোভাবেই যেন পানিশূন্যতা না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অনেকের সেহেরীর পর চা, কফি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে।  চা, কফি ডাইইউরেটিক হওয়ার ফলে সহজেই শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে পানি বের হবে দেয়। ফলে খুব দ্রুত পানি পিপাসা পায়।  অনেক সময় পেটে অস্বস্তি বৃদ্ধি করে।  চা, কফির ক্যাফেইন আমাদের শরীরে আয়রন শোষণে ব্যাঘাত ঘটায়।

তাই চেষ্টা করুন এই জাতীয় খাবার সেহেরীতে না খাওয়ার। ডায়বেটিক রোগীদের মিষ্টির ক্ষেত্রে সর্তক থাকতে হবে। এ সকল রোগীর রক্তের গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া কোনটিই ভালো নয়।  সেহেরী যথাসম্ভব দেরি করে খেলে পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে।  সুষম খাবার আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বলে আমাদের সকলেরই খাবারের ৬টি উপাদানের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

Share this content:

Back to top button