শ্রীলংকার পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার নির্দেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করবে ইউএনপি

এবিএনএ: শুক্রবার শ্রীলংকার পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত রণিল বিক্রমাসিংহের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) এ ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করতে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে এক বিবৃতিতে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের অর্থমন্ত্রী মাঙ্গালা সামারাবিরা জানান, তার দল আদালতে যাবে। তিনি বলেন, আমরা আদালতে লড়ব, আমরা পার্লামেন্টে লড়ব এবং আমরা নির্বাচনেও লড়ব। তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম এই আশায় যে তিনি এ শ্রীলংকার নেলসন ম্যান্ডেলা হয়ে উঠবেন। কিন্তু তিনি দেখিয়েছেন যে তিনি একজন বিশ্বাসঘাতক। ম্যান্ডেলা হওয়ার প্রতিশ্রুুতি দিয়ে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে হয়েছেন। বৃটেনভিত্তিক দ্যা গার্ডিয়ান ও অনলাইন আল-জাজিরা জানিয়েছে, পাল্টাপাল্টি এসব সিদ্ধান্তে দেশটির রাজনৈতিক সংকট আরো ঘনীভ’ত হচ্ছে। এর আগে শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে এ সংক্রান্ত আদেশে সাক্ষর করেন। সেখানে বলা হয়, শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার এ নির্দেশ কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করা হয়, ২০১৯ সালের ৫ই জানুয়ারি এবং নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন বসবে ১৭ জানুয়ারি। গত ২৬ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেকে সরিয়ে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। কিন্তু বিক্রমাসিংহে এখনো নিজেকে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাবি করছেন। পার্লামেন্টে তার আসন সংখ্যাও রাজাপাকসের থেকে বেশি। বিক্রমাসিংহের দল ইউএনপির আসন সংখ্যা ১০৬টি। অপরদিকে রাজাপাকসের আসন রয়েছে ৯৫টি। দেশটির সংবিধান মোতাবেক, পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত ছাড়া প্রেসিডেন্ট চাইলেই প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্থ করতে পারেনা। কিন্তু পার্লামেন্টে বিক্রমাসিংহের আসন বেশি হওয়ায় সেখানে ভোটাভুটি হলেও তাকে সরিয়ে দেয়া যাবে না। তাই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন সিরিসেনা। এ ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পরেছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ঘোষণাকে অসাংবিধানিক বলে সমালোচনা করেছেন। এছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
Share this content: