জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

‘রোহিঙ্গাদের স্থান দিতে বনাঞ্চল, প্রকৃতি নষ্ট হচ্ছে’

এবিএনএ: মিয়ানমার ছেড়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্থান দিতে গিয়ে বাংলাদেশে বনাঞ্চল ধ্বংস ও প্রকৃতির ক্ষতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের মতো শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে এক রোল মডেল। তবে এই রোহিঙ্গাদের জন্যই আমাদের বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ অনেক বেশি দক্ষতা অর্জন করেছে। এ ধরনের সংকট আমাদেরকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মানুষের দুর্যোগজনিত স্থানচ্যুতি বা উদ্বাস্তু বিষয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এবং প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাস্টার ডিসপ্লেসমেন্টের (পিডিডি) সহায়তায় ‘অ্যানুয়াল থিমেটিক মিটিং অব দ্য প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাস্টার ডিসপ্লেসমেন্ট’ শীর্ষক দিনব্যাপী এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ও ভাইস সরমাদ, আইওএম’র পরিচালক (গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন) মাইকেল ক্লেইন সলোমন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি ইনিক বোরদিন, বাংলাদেশ জার্মানির ডেপুটি হেড অফ মিশন মাইকেল স্কালথেসিস এবং বাংলাদেশের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল। বাংলাদেশসহ জার্মানি, ফিজি, কোস্টারিকা, ফ্রান্স, মেক্সিকো এবং সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৩০ জন প্রতিনিধি সেমিনারে অংশ নেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম হয়েও বাংলাদেশ আশানুরূপ বৈদেশিক অর্থ সহায়তা পাচ্ছে না। তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি এক মিটার বেড়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশের ২০ শতাংশ জমি তলিয়ে যাবে। এ ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থেকেও আমরা সেভাবে বৈদেশিক অর্থ সহায়তা পাচ্ছি না। যখন এই পরিস্থিতি আমাদের সামনে আসবে তখন বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ শতাংশে নেমে আসবে। বাংলাদেশের মতো এমন আক্রান্ত দেশগুলোর জন্য প্রতি বছর ১০০ থেকে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার কথা,  কিন্তু আমরা সেগুলো কিছুই পাচ্ছি না। শুধু কথা-বার্তাই হচ্ছে। তাই পাবলিক এওয়ারনেস, গ্লোবাল এওয়ারনেস তৈরি করতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা এ সেমিনারের আয়োজন করেছি।
অনুষ্ঠান শেষে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কবে নাগাদ ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হবে-তার সময়সূচি এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা বেশ ভালোভাবেই মোকাবিলা করতে পারছি। তবে রোহিঙ্গা সংকটের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে নিয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

Share this content:

Related Articles

Back to top button