জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

রূপপুরে ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহনে নদী ড্রেজিংয়ে ৯৫৬ কোটি টাকার প্রকল্প

এবিএনএ : নির্মাণাধীন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ভারী যন্ত্রপাতি সমুদ্রবন্দর হতে পরিবহনের জন্য নৌ-পথ ব্যবহার করা হবে। এজন্য ‘মোংলা হতে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশী পর্যন্ত নৌ-রুটের নাব্যতা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলনকেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, রূপপুর পারমাণিবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ভারী মালামাল পরিবহন নিরাপদ ও সহজতর করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর হতে নৌ-পথে রূপপুর পর্যন্ত নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও সংরক্ষণ করাই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫৬ কোটি টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ভারত হয়ে যেসব বড় বড় নদী বাংলাদেশের নদীগুলোর সাথে যুক্ত হয়েছে সেগুলোকে ভারতে সাথে যৌথভাবে ড্রেজিং করার একটা খসড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত নদীগুলোর ড্রেজিং না করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কারণ যৌথ নদীগুলোর মাধ্যমে ভারত থেকেই এদেশে পলি চলে আসে। তাই ভারতের সাথে আলোচনা হয়েছে তাদের সহযোগিতা নিয়ে ড্রেজিং করা হবে। ভারত ৭০ ভাগ এবং বাংলাদেশ ৩০ ভাগ খরচ বহন করবে।
একনেক বৈঠকে ৩ হাজার ১৭১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল হতে ২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা আকারে ৫৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য রয়েছে।
বৈঠকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৪০৯৫ কি.মি., মায়ানমারের ২৫৬ কি.মি. এবং উপকূলীয় এলাকায় ৫৮০ কি.মি. আন্তর্জাতিক সীমারেখা রয়েছে। এই সকল সীমারেখার মধ্যে অনেকগুলো স্থল বন্দর রয়েছে যেখান দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি-রফতানি হয়। এছাড়াও প্রতিনিয়ত অনেক পর্যটকস্থল বন্দরগুলো দিয়ে চলাচল করে। এই বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে ৬৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১: শেওলা, ভোমরা, রামগড় স্থল বন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো বেনাপোল স্থল বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি এবং ভোমরা, শেওলা ও রামগড় স্থল বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনপূর্বক পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিকরণ। এটি নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি চলতি বছর জুলাই হতে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।
সভায় ৩৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, ৩৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুর-ধানুয়া কামালপুর-কদমতলা (রৌমারী) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণ প্রকল্প, ৩৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্প (২য় পর্যায়), ২০০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর ও ভুঞাপুর উপজেলাধীন যমুনা নদীর বামতীরবর্তী কাউলীবাড়ী ব্রিজ হতে শাখারিয়া পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, ১৯০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে চাঁদপুর জেলার হরিণা ফেরিঘাট এবং চরভৈরবী এলাকার কাটাখাল বাজার রক্ষা প্রকল্প এবং ১১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেট টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শোকের মাস আগস্টের প্রথম দিনের একনেকে ১৫ আগস্টের সেই ভয়াল কালরাত এবং শিশু রাসেলের উপর নির্মমতার শোককে স্মরণ করে একনেকের সদস্যদের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী কলেজটির নামকরন শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সিলেট করতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button