আমেরিকালিড নিউজ

মার্কিন নির্বাচন : ইলেকটোরাল আর জনপ্রিয় ভোটের পার্থক্য

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রার্থী সর্বাধিক ভোটারের ভোট পেয়েও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না আবার কেউ ইলেকটোরাল ভোটে জয় পেয়ে হয়ে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট। কারণ কি? প্রকৃতপক্ষে, এর সবচেয়ে সহজ উত্তর, দেশটির সংবিধান প্রণেতারা এমন পদ্ধতিতে রেখেই সংবিধান তৈরি করেছেন। এর সঙ্গে কোনো দেশের মিল নেই।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের স্বতন্ত্র এই পদ্ধতির কারণেই ২০১৬ সালের নির্বাচনে কম ভোট পেয়েও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির ফলে দেশটির ইতিহাসে এ পর্যন্ত চার জন প্রার্থী জনপ্রিয় ভোটে জয়ী হয়েও প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। এর মধ্যে একজন ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটন।

এতে করে কোনো বড় রাজ্যের একটি ভোটের চেয়েও ছোট রাজ্যের একটি ভোট গুরত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এটা হয় ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির কারণেই। উদাহরণস্বরূপ ক্যালিফোর্নিয়ায় রয়েছে সর্বোচ্চ ৫৫টি ইলেকটোরাল ভোট। আবার আলাস্কা, সাউথ ডাকোটা, ভারমন্টের প্রতিটিতে রয়েছে ৩টি করে ইলেকটোরাল ভোট। মূলত একটি রাজ্যের প্রতিটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের জন্য একটি করে ভোট এবং দুজন সিনেটরের জন্য দুটি করে ভোট বরাদ্দ থাকে। ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৩টি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে। অন্য অঙ্গরাজ্যগুলোর মতোই সেখানে রয়েছে ২টি সিনেট আসন। ফলে অঙ্গরাজ্যটির মোট ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৫৫টি।

মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি তাই অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় স্বতন্ত্র এবং কিছুটা জটিল। কোনো একজন প্রার্থী নাগরিকদের সরাসরি ভোট পেলেই যে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন তা হয় না। বরং ইলেকটোরাল কলেজ নামে যুক্তরাষ্ট্রের যে বিশেষ নির্বাচনী ব্যবস্থা আছে— তার মাধ্যমেই ঠিক হয় কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।

উদাহরণস্বরুপ, ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ২৯ লাখ ভোট বেশি পেয়েও এই ইলেকটোরাল পদ্ধতির কারণে প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে মাত্র ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন বলেই হিলারির এই পরিণতি। সবচেয়ে বেশি ইলেকটোরাল ভোট থাকা ছয়টি অঙ্গরাজ্য হলো ক্যালিফোর্নিয়া (৫৫), টেক্সাস (৩৮), নিউইয়র্ক (২৯), ফ্লোরিডা (২৯), ইলিনয় (২০) ও পেনসিলভেনিয়া (২০)। প্রতিটি নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজে ভোট বেশি থাকা রাজ্যগুলোতে প্রচারণাও চলে বেশি। কারণ এসব রাজ্যই হয়ে ওঠে জয়-পরাজয়ের বড় নিয়ামক।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button