এবিএনএ: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ সাত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদ নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে নেমেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। এ তালিকায় রয়েছেন দুই সংসদ সদস্য, সাবেক বিচারপতি, সাবেক সচিব, সেনা কর্মকর্তা, সাবেক আইজিপিসহ মোট ২২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
গত ১৩ এপ্রিল জামুকার ৯৫তম সভায় এসব বিতর্কিত সনদ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, যাঁদের তথ্য সেনা সদর দপ্তর থেকে সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিল করা হবে।
বিশেষ নজরে রয়েছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক, যাঁর প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গেজেটভুক্ত হন তিনি, যা নিয়ে জাতীয় সংসদেও বিতর্ক হয়। এমনকি ২০২৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে রিট করেন জামুকার সদস্য খ ম আমীর আলী।
তালিকাভুক্ত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, শ ম রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, টিপু মুনশি ও ডা. মোজাম্মেল হোসেন। এ ছাড়া রয়েছে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক আইজিপি আবদুর রহিম খান, লে. জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির, ক্যাপ্টেন আনারুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে সরকার কাজ শুরু করেছে। এজন্য অনলাইনেও অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন আবেদন ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই কার্যক্রম চলছে।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, কিছু গেজেটভুক্ত ব্যক্তির বয়স ছিল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ন্যূনতম বয়সের নিচে। কেউ কেউ পাকিস্তানি বাহিনীতে থাকাকালীন আত্মসমর্পণ করে ভারতে পাঠানো হয়, যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁদের সরাসরি ভূমিকা নেই বলেই অভিযোগ উঠেছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তবে প্রতিবারই কিছু নাম নিয়ে বিতর্ক থেকেছে। জামুকার বর্তমান উদ্যোগে নতুন করে সেই বিতর্ক ফের কেন্দ্রে এসেছে।
Share this content: