জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

ভাস্কর্য বিতর্ক: এবার হেফাজতের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

এবিএনএ : সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা ভাস্কর্য অপসারণ না হলে আবার শাপলা চত্বর তাণ্ডব ঘটানোর হুমকি দেয়া হেফাজতে ইসলামীকে রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। গত কয়েক সপ্তাহে তারা জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনের এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করলেও শুক্রবার জুমার নামাজের পর সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে জড়োই হতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন হওয়া ন্যায়বিচারের প্রতীক ভাস্কর্যর অনুকরণে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুরূপ একটি স্থাপনা তৈরি হয়েছে। এটি স্থাপনের পর পর সেটি অপসারণের দাবিতে মাঠে নামে হেফাজত। তাদের দাবি, এটি একটি মূর্তি এবং সেটি মানুষের ঈমান-আক্বিদার ক্ষতি করছে।

স্থাপনাটি অপসারণ না হলে পরিণতি ভালো হবে না বলে গত কয়েক শুক্রবারের জমায়েতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজত কর্মীরা। দাবি পূরণ না হলে আবারও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মত তাণ্ডবের ঘটনা ঘটানোর হুমকি দিয়েছিলেন নেতারা।

ধর্মভিত্তিক এ সংগঠনটি ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে সমাবেশের ডাক দিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। পরে রাতে শাপলা চত্বরে অভিযান চালিয়ে হেফাজত নেতা-কর্মীদেরকে উচ্ছেদ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই অভিযানে ব্যাপক প্রাণহানির অভিযোগ তুলে তার কোন প্রমাণ দিতে পারেননি হেফাজত নেতারা। এমনকি অভিযানে নিহত হয়েছে এমন কয়েকজনের নাম জানালেও পরে তাদেরকে জীবিত পাওয়া যায়।

এই অবস্থায় আরেকটি ৫ মে ঘটানোর হুমকি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে। আর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীও এবার কঠোর অবস্থান দেখিয়েছে। আর তাদের বাধার মুখে হুমকি-ধামকি দেয়া সংগঠনটি কর্মসূচি পালন না করেই ফিরে যায়।

গত কয়েক সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবারও বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল ধর্মভিত্তিক সংগঠনটি। তবে তার আগেই এই এলাকায় অবস্থান নেয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। সম্ভাব্য গোলযোগ ঠেকাতে তাদের প্রস্তুতিও ছিল দেখার মত। হেফাজতের কর্মীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করতেই বাধা দিয়েছে তারা। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটকের অভিযোগও করেছে হেফাজত।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পূর্বানুমতি না থাকায় সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ করার কোন পূর্বানুমতি ছিল না। তারপরও তারা সমাবেশ করার জন্য জড়ো হচ্ছিল। এসময় তাদের নেতার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে যার নেতৃত্বে তারা ওখানে জড়ো হচ্ছিল, তিনিও কথা না বলে পালিয়ে যান। এসময় একজনকে আটক করা হয়েছে।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এস এম শিবলী নোমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হেফাজতের সমাবেশ করার জন্য কোন অনুমতি ছিল না। আর আমরা কোনো বেআইনি সমাবেশ করতে দিতে পারি না।’

রাজধানীতে কোনো সভা-সমাবেশ করতে হলে মহানগর পুলিশের অনুমতি নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অনুমতি না থাকায় বিএনপিও তাদের ঘোষিত বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করতে পারেনি গত কয়েক মাসে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button