আমেরিকালিড নিউজ

নিউইয়র্কে শেষকৃত্যের বিড়ম্বনা

এবিএনএ : অরুপ শ্যাম চৌধুরী সিলেট শহরের পরিচিত মুখ। অনেকের কাছে বাপ্পা নামে পরিচিত। নিউইয়র্কে থিতু হয়েছেন ২০০৯ সালে। স্ত্রী দেশের প্রখ্যাত গায়ক প্রয়াত সুবির নন্দীর শ্যালিকা, কবিতা সেনগুপ্ত। সবাই ডাকে চন্দ্রা বউদি। অত্যন্ত সহজ সরল মনের এই মানুষটি ১৮ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ১৭ বছর বয়সী এক ছেলের মা। গত ৩১ মার্চ অসুস্থতা ধরা পড়লে দ্রুত তাঁকে নেওয়া হয় এল্মহার্স্ট হাসপাতালে। পরীক্ষায় জানা যায়, তিনি করোনা পজিটিভ।

চিকিৎসক আর নার্সদের আন্তরিক প্রচেষ্টা পেছনে ফেলে ২ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। করোনার কারণে বাসায় থাকা পরিবারের সবাইকে একা আর নীরবে এই শোকের সময় কাটাতে বাধ্য হতে হয়। নগরীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন আত্মীয়স্বজন। সবাই অসহায় হয়ে টেলিফোনে সান্ত্বনা দিচ্ছেন পরিবারকে। এর মাঝেই করতে হবে শেষকৃত্যের আয়োজন। বাংলাদেশের হিন্দু কমিউনিটির স্বজন প্রয়াণে শেষকৃত্যের জন্য অধিকাংশরা দ্বারস্থ হন এস্টোরিয়ার একটি ফিউনারেল হোমে। না সেখানে কেন, আসলে কোথাও ঠাঁই নেই। প্রত্যেক ফিউনারেল হোমে দাহ করার জন্য অসংখ্য মৃতদেহ অপেক্ষমাণ। অবশেষে কুইন্সের করোনার ১০৪ স্ট্রিটের কপোলা মিগলয়রি ফিউনারেল হোম দুই হাজার ডলারের বিনিময়ে শেষকৃত্যের দায়িত্ব নেয়। হোমের দেওয়া তারিখ অনুযায়ী মৃত্যুর ১১ দিন পর ১৩ এপ্রিল বেলা দুটায় মরদেহের দাহ সম্পন্ন হয়।

কবিতা সেনগুপ্তকে দাহ করা হয় নিউজার্সির নিউইয়র্ক শহরের ১৮৫, ম্যাকগ্লেইন স্ট্রিটেক গ্রিনউড সিমেট্রির সুপরিসর শেষকৃত্য কক্ষে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বামী অরুপ শ্যাম চৌধুরী ও তাঁর দুই সন্তান। পুরোহিত রনজিত কুমার ভট্টাচার্য টেলিফোনে শুদ্ধ মন্ত্র পাঠ করে দাহ কার্যের ধর্মীয় আচার পালন করেন।

দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অকুল পাথারে পড়া অরুপ চৌধুরী বাসায় ফিরে শুরু করলেন প্রথামতো ছেলের মাথা মুণ্ডনের আচার কার্য। সাধারণত যে আচার হয়ে থাকে স্বজন বেষ্টিত আর পুরোহিত ব্রাহ্মণের ধর্মীয় নির্দেশ মতো। কিন্তু তা হলো করোনার তাণ্ডবে শোকে আর বেদনার ভারে নুয়ে পড়া নগরীর এক প্রান্তের দুই বেড রুমের অভ্যন্তরে। টেলিফোনে আবারও মন্ত্র পাঠের কাজটি সারলেন শুদ্ধ ব্রাহ্মণ রনজিত কুমার ভট্টাচার্য

Share this content:

Related Articles

Back to top button