বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন বা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নই: জামায়াতের আমির

এবিএনএ: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ; ফুলের বাগান। মাঝে মাঝে কিছু হুতোমপ্যাঁচা আমাদের ফুলের বাগানে ঢুকে সবকিছু এলোমেলো করে দেওয়ার অপচেষ্টা করে। এরা কোনো ধর্মের নয়, বরং এরা অপশক্তি। তাই, এদের সম্পর্কে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।”

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর সেনপাড়া ব্যাপটিস্ট চার্চে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা। সভায় আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান জামায়াতে ইসলামীর আমির।

রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, মিরপুর ব্যাপটিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক বাবুল কুমার সাহা, মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পালক রেভারেন্ড প্রিন্স কিরণ বাইন, সহ-সম্পাদক মনোজ বাড়ৈ, কোষাধ্যক্ষ অসিত মিত্র, ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মহিলা কমিটির সভানেত্রী প্রভাতি ফলিয়া, সম্পাদক অনিমা বাড়ৈ প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদি মাতা হজরত হাওয়া (আ.)। ইসলামে সব নবী-রাসুলকে যথাযথভাবে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এটা আমাদের ঈমান বা বিশ্বাসের অংশ। তারা সকলেই আল্লাহর প্রফেট; মেসেঞ্জার। তারা আল্লাহর বিধানের বার্তাবাহক হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে হজরত ইসা (আ.) ব্যতিক্রম। তিনি দুনিয়াতে দ্বিতীয়বার এসে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবেন। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করি না। জামায়াত ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মত, পথ নির্বিশেষে সকলকে নিয়েই দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”

তিনি জামায়াতের এই সংগ্রামে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ সব ধর্মের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।জামায়াতের আমির বলেন, “বাংলাদেশ ছোট একটি রাষ্ট্র। এ দেশে ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। দেশে নানা ধর্ম ও গোত্রের মানুষের বসবাস করলেও মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান প্রধানতম ধর্ম। সকলের সাথে মিলেমিশে চলা আমাদের ঐতিহ্য। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন বা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নই, বরং আমরা সকলেই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। জামায়াতের লোকেরা চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি, লুটপাটসহ কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত নন। তারপরও আমাদের কোনো মানবীয় ভুল থাকলে, তা ধরিয়ে দিলে আমরা তা সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই হীনমন্য নই। আমরা দেশের সকল নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সব সময়ই আপসহীন।” তিনি একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকল শ্রেণির মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

Share this content:

Back to top button