এবিএনএ: দেশে গ্যাসের তীব্র সংকটে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আবাসিক ও শিল্প খাত। ঘরের চুলা জ্বলছে না, শিল্পাঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে উৎপাদন। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় যে, সিএনজি স্টেশনগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে চালকদের।
গরমে বিদ্যুৎ খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করায় অন্যান্য খাতে সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) জানায়, বিদ্যুৎ খাতে ৪৩ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, যেখানে শিল্পে ১৮ শতাংশ এবং আবাসিকে মাত্র ১১ শতাংশ গ্যাস বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে গ্যাসচাপ এতটাই কম যে, অনেক কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) এক নেতার ভাষ্য, রূপগঞ্জে তার কারখানায় স্বাভাবিক গ্যাসচাপ ১৫ পিএসআই হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ২ পিএসআই পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ডিজেল কিনে উৎপাদন চালাতে হচ্ছে, তাও সক্ষমতার মাত্র ৫০ শতাংশ হারে।
আবাসিক এলাকাতেও চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুরের বাসিন্দারা জানান, দিনে গ্যাস মেলে না বললেই চলে, গভীর রাতেও চাপ থাকে না।
সিএনজি চালকেরা বলছেন, এক মাস ধরে প্রতিদিনই গ্যাস নিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। মিরপুরের একটি ফিলিং স্টেশনে গ্যাসের জন্য গাড়ির লাইন সকাল থেকেই দেখা যায়।
তিতাস গ্যাসের অপারেশন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক বলেন, বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ১৯৬৩ মিলিয়ন ঘনফুট, অথচ সরবরাহ মিলছে মাত্র ১৫৩০ মিলিয়ন ঘনফুট—ঘাটতি ৪৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট।
তবে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী যে মে ও জুন মাসে স্থানীয় উৎস ও এলএনজি থেকে গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। মে মাসে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং জুনে আরও ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে পারে।
Share this content: