ফিচার

দাম্পত্য মধুময় হয় ভালোবাসার প্রকাশে

এবিএনএ : জীবনে চলার পথে নানা বাঁধা-বিপত্তি আসতেই পারে। তাই বলে তো আর জীবন থেমে থাকে না। সবকিছুকে জয় করে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হয়। সুখ-দুঃখ-আনন্দ মিলিয়েই দাম্পত্যজীবন। কাজেই এ সময় দুঃখের মাত্রা যেন বেড়ে না যায়, বিশ্বাস ভঙ্গ না হয় এবং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে চিরদিন কীভাবে মধুময় রাখা যায় সে চেষ্টা কম-বেশি সবাই করে থাকেন। তবে কেবল একজনের চেষ্টা সংসার সুখের হতে পারে না। এজন্য দরকার দুজনের সম্মেলিত প্রচেষ্টা।

এক্ষেত্রে সংসার সুখের করতে এক জার্মান বিশেষজ্ঞ কিছু উপায়ের কথা বলেছেন-

জীবনসঙ্গী
দাম্পত্যের শুরুতেই কিন্তু সমালোচনা বা অভিযোগের কোনো জায়গা নেই। তাই শুরুতেই নিজের সঙ্গী সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। হাসি-ঠাট্টার মধ্য দিয়ে একে অপরকে নিজের ইচ্ছা, পছন্দ, অপছন্দ আর প্রত্যাশার কথা ধীরে ধীরে জানিয়ে দিন। এতে করে দাম্পত্যে সুখ ধরে রাখা সহজ হবে।

কিছুটা স্বাধীনতা সবারই প্রয়োজন
ব্যক্তি বিশেষেই স্বাধীনতার প্রয়োজন রয়েছে। দাম্পত্য মানেই কিন্তু স্বাধীনতা বিসর্জন দেওয়া নয়। এজন্য আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে কিছুটা সময় নিজের জন্য বের করুন। এ সময় খেলাধুলা, ব্যায়াম বা পড়াশোনা কাজে ব্যয় করুন। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস থাকলেই কেবল সংসার সুখের করা সম্ভব।

সন্তানের জন্মের পর
বাচ্চার জন্মের পর ওকে ঘিরেই দম্পতিরা সবসময় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এটা ঠিক নয়। এ সময় দুজনই কাজগুলো ভাগাভাগি করলে কাজ অনেকটাই হালকা হয়। ব্যস্ততার মধ্যেও দুজনের জন্য খানিকটা সময় বের করুন। দেখবেন সুখে থাকা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে।

‘কমপ্রোমাইজ’-এর বিকল্প নেই
জীবনে একসঙ্গে বাস করতে গেলে ঝগড়া কিংবা মনোমালিন্য হতেই পারে। তাই বলে এতে অপরের সঙ্গে কথা বন্ধ রাখবেন এটা ঠিক নয়।  এক্ষেত্রে বিষয়টা মিটমাট করতে যে কোন একজনকে এগিয়ে আসতেই হয়। প্রিয়জনকে কেবল ‘সরি’ বলুন, দেখবেন সব সমস্যা মিটে গেছে।

একঘেয়েমি দূরে করুন
সময়ের বিবর্তনে ভালোবাসা এক সময় ম্লান হয়ে যায়। কাজেই সম্পর্কটা সবসময় সতেজ রাখতে সঙ্গী যে কোন সময় ছোটখাট উপহার দিন। চাইলে কোথাও খেতে, সিনেমা দেখতে কিংবা কোন অনুষ্ঠানে বেড়াতে যেতে পারেন। মাঝে মাঝে এমন করলে সম্পর্ক আর চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

বোঝা বা জানার চেষ্টা
আজকের এই যান্ত্রিক জীবনে সংসার, সন্তান, পেশা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি নিয়ে নানা ঝামেলা আসতে পারে। যার প্রভাব আমাদের সাংসারিক জীবনে পড়তে পারে। কাজেই অকারণে একজন রেগে গেলে অন্যজন পাল্টা রাগ না করে রাগের আসল কারণ কি তা বরং জানার চেষ্টা করুন। এ সময় আলোচনা করে একে অপরকে সাহায্য বা পারামর্শ দিতে দিতে পারেন।

বিশ্বাস
যে কোন সম্পর্ক কেবল বিশ্বাসের জোরেই টিকে থাকে। কেউ যদি ভুল বা ইচ্ছে করে অন্য কারো সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে যান, তাহলে সে বিষয়ে কথা বলুন। হয় ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসুন, না হয় দাম্পত্যজীবনের বিচ্ছেদ ঘটান। অবিশ্বাস জিইয়ে রাখলে অনেক সময় সংসার টিকে থাকে ঠিকই কিন্তু তা কখনো সুখের কখনো হয় না।

সেক্স নিয়ে কথা বলুন
আনন্দময় যৌনমিলন ছাড়া মধুময় দাম্পত্যজীবন কখনোই সম্ভব না। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, নারীদের এ ব্যাপারে আগ্রহ কম কিংবা স্বামীও তার মনের কথা ঠিকমতো বলতে পারছেন না। তাই এ বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

সন্তান বড় হয়ে গেলে
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সন্তান বড় হয়ে গেলে মা-বাবারা নি:সঙ্গ বোধ করেন। কাজেই এ সময় নি:সঙ্গতা কাটাতে পুরানো হবিগুলো আবারও শুরু করুন। সবসময় দুজনেই পজিটিভ চিন্তা করলে দেখবেন সময়টাগুলো ভালো ও আনন্দে কেটে যাচ্ছে।

ছুটি কাটান
ছুটির দিনে দুজনে কোন জায়গায় ঘুরতে যান। মন যেভাবে চায় সেভাবেই পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটান। দেখবেন দাম্পত্যজীবন অনেক মধুময় হয়ে উঠবে। তথ্যসূত্র: ডিডব্লিউ।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button