থাইল্যান্ডের সেই গুহা থেকে সবাই উদ্ধার

এবিএনএ : চরম ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযান চালিয়ে থাইল্যান্ডের গুহায় আটকা পড়া সবাইকে বাইরে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন ডুবুরিরা। মঙ্গলবার কোচসহ ৫ জনকে বের করে আনা হয়। এর আগে গত দুই দিন ধরে অভিযান চালিয়ে আটজনকে গুহা থেকে বের করে আনা হয়েছিল। থাম লুয়াং গুহা ভিতরের এই অভিযান বিশ্বব্যাপী সবার মনোযোগ কেড়েছে। ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যার কারণে গত ২৩ জুন এই দলটি গুহার ভেতর আটকা পড়ে। পরে গত সপ্তাহে তাদের সন্ধান পান ডুবুরিরা। গুহা উদ্ধারকৃত কিশোরদের কাউকেই জনসমক্ষে আনা হয়নি। তবে তারা প্রত্যেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছে বলে জানানো হয়েছে। থাই কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া কিশোরদের এখনও বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি। ওই কিশোররা জাউ ভাত খেতে পারছে। তারা মাংস ও চকলেট খেতে চাইলেও হজমে সমস্যা হতে পারে এমন আশঙ্কায় তাদের সেটা দেয়া হচ্ছে না। কেননা তারা প্রত্যেকেই কয়েকদিন ধরে না খেয়ে ছিল।
যেভাবে তাদের উদ্ধার করা হল:
৯০ জন দক্ষ ডুবুরির একটি দল, যাদের ৪০জন থাইল্যান্ডের এবং বাকিরা বিভিন্ন দেশের- তারা ওই গুহায় উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন। তারা থাম লুয়াং গুহার ডুবে যাওয়া অন্ধকার সংকীর্ণ পথ দিয়ে কিশোরদের দিক নির্দেশনা দিয়ে প্রবেশমুখে নিয়ে নিয়ে এসেছে। অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই কিশোরদের একটি ক্লান্তিকর যাত্রাপথ পাড়ি দিতে হয়। যেটা কিনা অভিজ্ঞ ডুবুরিদের জন্যও ভীষণ ক্লান্তিকর ছিল। এই অভিযান প্রক্রিয়া জুড়ে ছিল হাঁটা, পানির ওপর দিয়ে চলা, বেয়ে ওঠা, এবং পানিতে ডুব দিয়ে দড়ি ধরে এগিয়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। সব ডুবুরি বাড়তি সতর্কতার জন্য মুখ জুড়ে মাস্ক ব্যবহার করেন। প্রতিটি কিশোরকে দুইজন করে ডুবুরি সাহায্য করেছে। তারা ওই কিশোরের অক্সিজেন সরবরাহের ট্যাঙ্কও বহন করে। তবে গুহার সবচেয়ে জটিল অংশটি হল অর্ধেক পথের “টি-জংশন”। যেটা এতোটাই সংকীর্ণ যে তার ভেতর দিয়ে যাওয়ার জন্য ডুবুরিদের অক্সিজেন ট্যাঙ্কটি খুলে ফেলতে হয়েছে। সেখানে কিশোররা বাকি পথ পাড়ির দেয়ার আগে কিছু সময় জিরিয়ে নিতে পারে। পরে তারা পায়ে হেটে সহজেই প্রবেশমুখে পৌঁছে যায়। সেখান থেকে তাদের চিয়াং রায়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধার অভিযানে অংশ দেওয়া দলের প্রধান বলেন, অভিযানের দ্বিতীয় দিনটি প্রথম দিনের তুলনায় আরো মসৃণভাবে পরিচালিত হয়েছে। প্রতিবার ডুবুরিদের দুঘণ্টারও কম সময় লেগেছে। একটি বিশাল পাম্পিং মেশিন দিয়ে গুহার ভেতরের পানির স্তর নীচে নামিয়ে আনা হয়। যা পুরো যাত্রাকে আরও সহজ করে তোলে।
Share this content: