
এবিএনএ : একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনরায় প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিজয় র্যালির উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশকে একটি কারাগারে পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অভীষ্ট স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এখনও গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হচ্ছে। গুম করে দেয়া হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তাই গণতন্ত্র ও দেশের মানুষকে মুক্ত করতে এ কারাগার ভাঙতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিজয় র্যালিতে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনরায় প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি।
তিনি বলেন, আমরা চাই আগামী প্রজন্ম যাতে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে বেড়ে ওঠে। কারণ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে একদলীয় শাসন কায়েম করতে প্রায় সব প্রক্রিয়াই সম্পন্ন করেছে। তারা আমাদের পদদলিত করতে চায়।
ফখরুল বলেন, দৃঢ়তার সঙ্গে একটি কথা উচ্চারণ করছি, বাংলাদেশের মানুষকে পদদলিত করে দাবিয়ে রাখা যাবে না।
এ সময় দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে যারা আত্মদান করেছেন, সেসব বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিব। পরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির শপথ নিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধের বিজয়ের ৪৬তম বছর পূর্তিতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালিতে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু, নুরী আরা সাফা, নাজিমউদ্দিন আলম, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, কাজী আবুল বাশার, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, রাজীব আহসান, আসাদুজ্জামান আসাদসহ মহনগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
র্যালিতে জাতীয় পতাকা, নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন-রঙিন বেলুন নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থক অংশ নেন। নেতাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ও জিয়াউর রহমানের স্মরণে নানা স্লোগান দেন।
দুপুর থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা নয়া পল্টন সড়কে এসে সমবেত হন। ফকিরের পুল থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁ পর্যন্ত দুপুর আড়াইটায় হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে র্যালিটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
বিকাল ৩টায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর হয়ে বিকাল পৌনে ৪টায় মালিবাগের এসে শেষ হয়।
র্যালিটির সামনের ভাগ যখন মালিবাগের মোড়ে তখনও শেষ ভাগ নয়া পল্টনের মোড় অতিক্রম করতে পারেনি। র্যালিটি মোড় ঘুরে আবার পল্টনে দিকে চলে যায়।
বিজয় শোভাযাত্রায় বিএনপির দলীয় পতাকার পাশাপাশি ঘোড়ার গাড়ি, জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের প্রতিকৃতি নিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা। শোভাযাত্রায় ব্যান্ডসঙ্গীতের দলও ছিল। অনেকে সেজেছেন মুক্তিযোদ্ধার সাজে।
এদিকে শোভাযাত্রায় নয়া পল্টন থেকে মালিবাগ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। শোভাযাত্রার উপলক্ষে কাকরাইল, বেইলি রোড, রাজারবাগ, মৌচাক, বিজয় নগরসহ বিভিন্ন সড়কে কয়েক’শ যানবাহন আটকা পড়ে। সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজটের। দুর্ভোগে পড়েন অসংখ্য যাত্রী।
Share this content: