
এবিএনএ: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ নির্বাচনের পাশাপাশি নতুন ১৮ ওয়ার্ডসহ ১৯ ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ চলছে। এ নির্বাচনকে ঘিরে রাজধানীর বাড্ডা, মেরুল, বেরাইদ, সাতারকুলে বইছে উৎসবের আমেজ। ডিএনসিসির মেয়রের কে হচ্ছেন তার চেয়ে কাউন্সিলর নিয়েই আগ্রহ বেশি এলাকাবাসীর। বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকালে বৃষ্টিতে কিছুটা বিড়াম্বনায় পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলনামূলক ভোটারদের উপস্থিতি বেড়েছে। বাড্ডা গালর্স হাইস্কুল অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজ, উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাড্ডা হাইস্কুল কেন্দ্র ঘুরে এবং ভোটার-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে। যদিও তফসিল ঘোষণার পর থেকেই মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে তেমন একটা প্রচারণা চোখে না পড়েনি। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর ছিল পুরো এলাকা। নির্বাচনের দিনেও কাউন্সিলর-সমর্থক, ভোটারদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রতি কেন্দ্রের বাহিরে আলাদাভাবে অবস্থান নিয়েছে কাউন্সিলরদের সমর্থকরা। ভোটার নম্বর প্রদানসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার মাধ্যেমে ভোট চাচ্ছেন তারা। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওসমান গণির মৃত্যুতে এ ওয়ার্ডেও উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মোট সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দুপুর ২টার পর রাজধানীর বাড্ডা হাই স্কুল কেন্দ্রে দেখা গেছে ভোটার উপস্থিতি তেমন একটা নেই। অল্প সংখ্যাক ভোটার ভোট দিচ্ছেন। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার সাইফুল হক জানান, খুব শান্তিপূর্ণবে ভোট চলছে। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২১৩৪। সকালে বৃষ্টির কারণে তুলনামূলক কম ভোটার এসেছে। আশা করা যায় বিকেলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। সব শেষে বলা যাবে কত শতাংশ ভোট পড়লো। কেন্দ্রের বাহিরে অপেক্ষমাণ ভোটার সাব্বির আহমেদ বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে কাউন্সিল কে হবেন তা নিয়েই বেশি আগ্রহ। সব প্রচার-প্রচারণা হয়েছে শুধু কাউন্সিলরদের পক্ষে। কারণ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা এ কাউন্সিলরের মাধ্যমেই আমরা পাবো। তাই মেয়রের চেয়ে আমাদের আগ্রহ কাউন্সিলর নিয়ে।
উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সংলগ্ন স্থানীয় চা দোকানী রমজান আলী বলেন, নির্বাচনী আমেজ বইছে শুধু কাউন্সিলর নিয়ে। মেয়র কে হবেন তা তো বুঝায় যায়। কিন্তু মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে কাউন্সিলরদের মধ্যে। আর এলাকাবাসীরও আগ্রহ কাউন্সিলর নিয়ে। ডিএনসিসি মেয়রের শূন্য পদে উপ-নির্বাচনের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণে সম্প্রসারিত ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও বিএনপি সরে দাঁড়িয়েছে। এতে দলীয় প্রতীকে মেয়র পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আতিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির শাফিন আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আনিসুর রহমান দেওয়ান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির শাহীন খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির এ নির্বাচনে মোট ৩২৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদপ্রার্থী ছাড়া উত্তরের সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৬ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতোমধ্যে উত্তরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর দক্ষিণ সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডের সাধারণ ওয়ার্ডে ১২৫ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জানা গেছে, উত্তর সিটির সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি, মোট ভোটকেন্দ্র এক হাজার ২৯৫টি এবং ভোটকক্ষ ৬ হাজার ৪৮২টি। এতে মোট ভোটার ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩০ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৯১ জন।
Share this content: