,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

ইউক্রেন স্মরণ করল চেরনোবিল দুর্ঘটনার ৩০তম বছর

এবিএনএ : পৃথিবীর পরমাণু ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের নাম চেরনোবিল। ইউক্রেন স্মরণ করল এই দুর্ঘটনার ৩০তম বছর। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল চেরনোবিল পাওয়ার প্ল্যান্টের ৪ নম্বর রিঅ্যাক্টরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের আওতাধীন ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। ঘটনাটি ঘটে মূলত আনুমানিক রাত দেড়টার কাছাকাছি সময়ে।

বলা হয়ে থাকে, নিরাপদ শীতলীকরণের উপর একটি সাধারণ পরীক্ষা চালানোর সময়, কর্তৃপক্ষের ভাষ্য মতে, কর্তব্যরত কর্মীদের অবহেলার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু এই দুর্ঘটনা নিয়ে অনেক রহস্য আজও অমীমাংসিত অবস্থায় রয়ে গেছে। দুর্ঘটনার ৩০ বছর পর আজও চেরনোবিল এলাকা মানুষ শূন্য। তবে ‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধ অনুসারে, মানুষের জন্য নিষিদ্ধ ওই এলাকাটি বলগাহরিণ, হরিণ, নেকড়ে, শূকর ও বন বেড়ালসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

কিন্তু এখনও এই অঞ্চল তেজস্ক্রিয় পদার্থের কারণে উত্তপ্ত অবস্থায় আছে। বিস্ফোরণ স্থলের ৩০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এখনও নির্ধারিত পোশাক ছাড়া কারো প্রবেশ নিষেধ করেছে দুই দেশের সরকার। বিস্ফোরণের আগে ওই অঞ্চলে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন মারা ও অনেক মানুষ তেজস্ক্রিয়তার শিকার হলে সকল অধিবাসীকে ওই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

চেরনোবিলের এই দুর্ঘটনা শুধু ইউক্রেন ও বেলারুশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ইউরোপের ১৫টি দেশের অর্ধেক এলাকা তেজস্ক্রিয় মেঘে দূষিত হয়ে যায়। এই বিপর্যয়ের কারণেই মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন বিস্তার পরিকল্পনার লাগাম টেনে ধরে। তবে আক্ষরিক অর্থে যে ওই পরিকল্পনা কোনো কাজে লাগেনি তা আমরা জাপানের ফুকুশিমার দুর্ঘটনার দিকে তাকালেই দেখতে পাই।

চেরনোবিল দুর্ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কম রাজনীতি হয়নি। ওই দুর্ঘটনায় যেহেতু সরাসরি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মারা যায়নি তাই পারমাণবিক জ্বালানির পক্ষের বিশেষজ্ঞরা একে আমলে না আনার জন্য বিভিন্ন মহলে বক্তব্য দিতে থাকেন। কিন্তু চেরনোবিল দুর্ঘটনার ফলে দীর্ঘমেয়াদে মানুষের শরীরে যে ক্যান্সার সৃষ্টি হচ্ছে সেটা বেমালুম চেপে যাওয়া হয় দীর্ঘদিন। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চেরনোবিলের কারণে সৃষ্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক লক্ষাধিক মানুষ মারা যায় বিভিন্ন সময়। এখনও অনেক মানুষ আছেন যারা ফুসফুস এবং থাইরয়েড ক্যান্সার নিয়ে ওই দুর্ঘটনাকে সাক্ষী মেনে বেঁচে আছেন।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় এখনও সুস্থ-সবল শিশু ২০ শতাংশেরও কম। বহু শিশু বিকলাঙ্গতা অথবা স্নায়ুতন্ত্রের গোলযোগ নিয়ে জন্মাচ্ছে। চেরনোবিলের দুর্ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেশ কয়েক দফা বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক তহবিল গঠনের কথা জানায়। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০০৪ সালে একবার চেরনোবিল কমিটি অর্থসংক্রান্ত এক বৈঠকের আহ্বান জানায়। সেই বৈঠকে ইউরোপের নেতারা তহবিল গঠনের শতভাগ আশ্বাস দিলেও ২০১১ সালেও সেই তহবিল গঠিত হয়নি। এমনকি, দুর্ঘটনার কারণ যে ৪ নম্বর রিঅ্যাক্টর থেকে, সেই রিঅ্যাক্টরের শরীরে এখনও ফাটল রয়ে গেছে, যা এখনও ঠিক করা হয়নি।

গবেষকদের প্রকাশিত তথ্য মতে, চেরনোবিল দুর্ঘটনা হিরোশিমায় ফেলা আণবিক বোমার চেয়ে চারশ’ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়েছিল। বর্তমানে সেই দুর্ঘটনাস্থলটিকে অন্যতম পর্যটক স্পট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ইউক্রেনের বাৎসরিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চেরনোবিল অঞ্চলে প্রতি বছর প্রায় বিশ হাজার পর্যটক আসেন স্থানটি ঘুরে দেখতে। কিন্তু এই পর্যটকদের নিরাপদে ঘুরে বেড়ানোর এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় অনেক পর্যটকই পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগের মুখোমুখি হচ্ছেন। এমনও দেখা গেছে যে, চেরনোবিল থেকে ফিরে আসার পর শরীরে ক্যান্সার ধরা পরেছে।

এদিকে ‘নিষিদ্ধ এলাকায়’ চালানো পূর্ববর্তী গবেষণাগুলোতে বন্যপ্রাণীদের উপর তেজস্ক্রিয়তার বড় ধরনের প্রভাব ও বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার সুস্পষ্ট নজির দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চালানো জরিপে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, স্তন্যপায়ীর সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পেয়ে দুর্ঘটনার আগের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক জরিপ ও গবেষণায় ওই এলাকায় বলগাহরিণ, স্থানীয় আরেক ধরনের হরিণ, লাল হরিণ এবং বন্য শূকরের প্রাচুর্যতা তুলনামূলক ভাবে ইউক্রেনের অন্যান্য সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলগুলোর সমপর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে দেখা গেছে। তবে চেরনোবিল এলাকায় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে নেকড়ের সংখ্যা, আর তা একই ধরনের যে কোনো সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনের নেকড়ের সংখ্যা থেকে সাতগুণেরও বেশি।

Share this content:

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal
Executive Editor : Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag, 2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka. Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited