
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রভাবমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।
এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নূরুল হুদা বলেন, শুধু সরকার কেন, রাজনৈতিক দল বা যেকোনো দেশি-বিদেশি সংস্থার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করতে পারব আমরা।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ‘রোডম্যাপ’ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, এটি একটি সূচনা দলিল। নির্বাচনের পথে কাজের জন্য এ কর্মপরিকল্পনাই সব নয়। সংযোজন-পরিমার্জন করে সবার মতামত নিয়ে আমরা কাজ করে যাব।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে সংসদ নির্বাচন করতে দৃঢ়তার সঙ্গে ও সুচিন্তিত পন্থায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশবাসী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন। সার্বিকভাবে দেশে জাতীয় নির্বাচনের একটি অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
ইসি কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে অংশীজন, গণমাধ্যম, দলসহ সংশ্লিষ্টদের সামনে উপস্থাপন করে সবার মতামত নেবে। সবার মতামতের আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব বলে ইসি বিশ্বাস করে।
দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সে ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে সংলাপে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের কাছ থেকে সুপারিশের পাশাপাশি সহযোগিতাও চান সিইসি।
তিনি জানান, তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনার সাতটি বিষয় ধরে তারা কাজ এগিয়ে নেবেন। তফসিল ঘোষণার পর ইসির কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা এলে আইনানুগ ব্যবস্তা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি একজন রাজনৈতিক দলের নেতার বাসায় ‘সামাজিক অনুষ্ঠানে’ পুলিশের বাধার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে এলে এ ধরনের ঘটনায় ইসির পদক্ষেপ কী হবে জানতে চান একজন সাংবাদিক।
জবাবে সিইসি বলেন, এটা সরকারের বিষয়। আমরা তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এখন সরকারের কাছে কোনো অনুরোধ থাকবে না। তবে তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতির প্রয়োজন হলে অনুরোধ করা হবে।
সাবেক এই আমলা বলেন, তফসিল ঘোষণার পরবর্তী ৯০ দিন নির্বাচনী আইন-বিধি অনুযায়ী ইসি কাজ করবে। এ মুহূর্তে সরকার কীভাবে পরিচালিত হবে, রাজনৈতিক কর্মপরিবেশ কীভাবে নিশ্চিত করা হবে তা কমিশনের এখতিয়ারে নেই।
সংবাদ সম্মেলনের স্বাগত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সব কাজ ‘প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রেখে’ করার চেষ্টা করেছেন তারা।
তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা ধরেই এগোচ্ছি। সুষ্ঠু, সুন্দর, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাই আমরা। সততা ও শক্তির স্বাক্ষর যেন আমরা রাখতে পারি, সে জন্য সবার সহযোগিতা চাই।
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
Share this content: