ভাতিজা-ভাগনের অঙ্গও এখন প্রতিস্থাপনযোগ্য, দেশে চিকিৎসার নতুন দিগন্ত
নিকটাত্মীয় ছাড়াও ভাতিজা-ভাগনের অঙ্গ নিয়ে দেশে বৈধভাবে প্রতিস্থাপন সম্ভব, উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন


এবিএনএ: দেশে মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত আইনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন শুধু নিকটাত্মীয়দের— যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, সন্তানদের— অঙ্গ ব্যবহার করে প্রতিস্থাপন করা যেত। এবার সেই পরিধি বাড়িয়ে ভাতিজা ও ভাগনের অঙ্গও বৈধভাবে প্রতিস্থাপনে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হলো।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন পেয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দানের সুযোগ শুধু নিকটাত্মীয়দের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে অনেক সময় প্রাপ্তির সংকট তৈরি হয়। এখন থেকে ভাতিজা ও ভাগনেরাও অঙ্গ দান করতে পারবেন। ফলে দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য আর অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। দেশের হাসপাতালগুলোতেই এসব প্রতিস্থাপন করা যাবে।”
নতুন অধ্যাদেশে মৃত্যুর পর দেহ দানের নিয়মেও পরিবর্তন এসেছে। অনেকে মৃত্যুর পর চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য দেহ দান করতে চান। এই দানকৃত দেহ থেকে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অঙ্গ নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে অন্ধত্ব দূর করা সম্ভব, আর কিডনি প্রতিস্থাপন বহু মানুষকে নতুন জীবন দেয়। কিন্তু এ সংক্রান্ত আইন বহুদিন ধরে পরিবর্তন হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই অধ্যাদেশটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায়, এই নতুন আইন শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতি নয়, বরং মানুষের জীবনের মান উন্নয়নেও এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এখন থেকে দেশের মধ্যেই অঙ্গ প্রতিস্থাপন কার্যক্রম আরও বিস্তৃত ও নিরাপদভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।