আন্তর্জাতিক

রাতারাতি বদলে গেল মোদির ঠিকানা

এ বি এন এ : রাতারাতি বদলে গেল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনের ঠিকানা। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে অফিসে গেলেন, রাতে ফিরে দেখলেন বাড়িটি আর আগের ঠিকানায় নেই। না, কোন আলাউদ্দীনের দৈত্য এসে বাড়িটি তুলে নিয়ে অন্য এলাকায় বসিয়ে দিয়ে যায়নি। মূলত, বদলে গেছে সড়কটির নাম। রেসকোর্স রোডের নাম হয়ে গেছে লোক কল্যাণ মার্গ। ইন্দিরা গাঁন্ধীর হত্যার পর থেকে সাত নম্বর রেসকোর্ড রোডে থাকতে শুরু করেন রাজীব গাঁন্ধী। তার পর বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের আমলে সিদ্ধান্ত হয়, এখানেই পরের সব প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। সেই ব্যবস্থাও হয়ে যায়। দিল্লিতে রেসকোর্সের ঠিক উল্টো দিকে এই রোডটি তখন থেকেই জনসাধারণের নাগালের বাইরে। বসানো হয় কড়া নিরাপত্তা। এই রাস্তার নাম বদলানোর জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই গলা চড়াচ্ছিলেন বিজেপির নয়াদিল্লি কেন্দ্রের সাংসদ মীনাক্ষী লেখি। ‘রেসকোর্স’ শব্দটি ভারতীয় ‘সংস্কৃতি’র সঙ্গে খাপ খায় না— এই অভিযোগ তুলে তিনি রাস্তাটির নাম ‘একাত্ম মার্গ’ রাখার প্রস্তাব দেন। রেসকোর্স রোডটি নয়াদিল্লি পুরনিগমের আওতায়। তাই নাম পাল্টাতে গেলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সেখানেই। গতকাল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বে  নয়াদিল্লি পুরনিগমের বৈঠকে স্থির হয়, ‘একাত্ম মার্গ’ নয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের রাস্তার নাম হবে ‘লোক কল্যাণ মার্গ’। খোদ মীনাক্ষী লেখিকে পাশে রেখেই এই ঘোষণা দেন কেজরি। লেখির প্রস্তাব আরএসএস ঘেঁষা দেখে কেজরি বলেন, ‘‘আমার কাছেও এই রাস্তার নাম গুরু গোবিন্দ সিংহ মার্গ করার প্রস্তাব ছিল।’’ আপের এক বিধায়ক ওই রাস্তার নাম আরএসএস ঘনিষ্ঠ কারও নামে না করে ‘৬৫ সালের যুদ্ধের এক সৈনিকের নামে করার দাবি তোলেন। কেজরিওয়ালের বক্তব্য- শেষ পর্যন্ত ‘লোক কল্যাণ মার্গ’ নামেই সংখ্যাগরিষ্ঠের সিলমোহর পড়ে। তবে নাম বদলের সঙ্গে সঙ্গে এর যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্কও ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কয়েক মাস আগে দিল্লির ঔরঙ্গজেব রোডের নাম বদলে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের  নামে করা হয়েছে। তার নেপথ্যেও ছিলেন দিল্লিতে বিজেপির আর এক সাংসদ মহেশ গিরি। গুড়গাঁও-এর নাম গুরুগ্রাম করার বিতর্কের রেশ এখনও থামেনি। যে আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতর, সেই রাস্তাকে মহারানা প্রতাপের নামে করার দাবি এখনও রয়েছে। ফলে নাম বদল করে ইতিহাস মুছে দেওয়া কতটা যৌক্তিক, সেই প্রশ্ন উঠে এসেছে আবার।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button