

এবিএনএ: বাগেরহাট সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুই প্রসূতি ও এক স্বজনকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট আবুল কালাম আজাদ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী দেখতে এসে এ কাণ্ড ঘটান বলে রোগী তার স্বজনের অভিযোগ। মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চমালা গ্রামের জাহিদুল বাবুর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৮), গাজীরঘাট গ্রামের আলম শেখের স্ত্রী রোজিনা বেগম (২০) এবং তার মা নাছিমা বেগম (৪৫) মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীর স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন অরুণ চন্দ্র মন্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এক রোগীর মা নাছিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, “রোববার ভোরে বাড়ি থেকে আমার সন্তানসম্ভবা মেয়ে রোজিনাকে নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আসি। তখন চিকিৎসক আমার মেয়েকে দেখে ভর্তি করে নেন।” সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক আজাদ আসেন নিয়মিত রাউন্ড দিতে। তখন তার মেয়ের প্রসব বেদনা শুরু হয়। সে সময় মেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছিলেন বলে নাছিমা জানান। নাছিমা বলেন, “এসময় জাক্তার এসে আমাকে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যেতে বললে আমার একটু দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমাকে দুটি চড় মারেন। আমি চড় খেয়ে ঘুরে পড়ে যাই। পরে তিনি আমার সন্তানসম্ভবা মেয়েকেও মাথায় চড় মারেন।” ওই ওয়ার্ডের আরেক রোগী ফাতেমা বেগম বলেন, “রোজিনাকে মারধর করে চিকিৎসক আমার বেডে এসে বলেন, ‘এই তোর তো গতকাল যাওয়ার কথা, তুই যাসনি কেন?’ এটা বলেই আমার মাথায় চড় দেন।” গাইনি ওয়ার্ডের অন্য আরেক রোগী মাহিনুর বেগম বলেন, “ডাক্তার এভাবে রোগীকে মারধর করে তা আগে কখনও শুনিনি বা দেখিনি। সকালে এ ডাক্তার মারলেন। এর আগে শনিবার রাতে আলট্রাসনোগ্রাম করার সময় ডাক্তার আমার সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন।” এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গাইনি বিভাগে একজন নারী চিকিৎসক দিলে ভালো হয় বলে মনে করেন এ নারী। রোজিনা বেগম বলেন, “সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের হাতে মার খেলাম। এর থেকে কষ্ট আর কী আছে। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।” বাগেরহাটের সিভিল সার্জন অরুণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “মারধরের শিকার রোগী ও তার স্বজনের জবানবন্দি নিয়েছি। রোগীদের গায়ে হাত তোলার ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আবুল কালাম আজাদ রোগী ও তার স্বজনের গায়ে হাত তুলে অপরাধ করেছেন। আমি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।” আবুল কালাম আজাদকে রোগী ও তার স্বজনের গায়ে হাত তোলার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে সিভিল সার্জন জানান। এ ব্যাপারে আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।