রাজনীতি

রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুতে কোন বিষয়ে একমত, কোনটিতে ভিন্নমত—স্পষ্ট করলো বিএনপি

রাষ্ট্র সংস্কার কমিশনের আলোচনায় বিএনপি জানিয়েছে, কোথায় রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে আর কোথায় মতানৈক্য এখনো রয়ে গেছে

এবিএনএ: রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিএনপি। দলটি জানায়, বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা গঠনমূলকভাবে কাজ করেছে। তবে কিছু কিছু ইস্যুতে মতানৈক্য রয়ে গেছে, যা কমিশনের কার্যক্রমকে কিছুটা ধীর করেছে।

রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ৬টি সংস্কার কমিশনের আলোচনায় বিএনপি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে এবং অধিকাংশ বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনে অন্য দলগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করেছে।

ফখরুল বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশনের বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা না হলেও, র‍্যাব বিলুপ্তিসহ অনেক বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। দুদক কমিশনের ৪৭টি সুপারিশের মধ্যে ৪৬টিতে একমত হলেও একটিতে তারা আদালতের অনুমতির বিধান বহাল রাখতে চেয়েছে। জনপ্রশাসন কমিশনের ২০৮ প্রস্তাবের মধ্যে ১৮৭টিতে তারা একমত, ১১টিতে মতানৈক্য প্রকাশ করেছে।

বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের ৮৯ সুপারিশের মধ্যে ৬২টিতে একমত হয়ে ৯টিতে আংশিক মত দিয়েছে দলটি। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে ২৪৩ সুপারিশের মধ্যে ১৪১টিতে একমত হয়েছে, কিন্তু ২৪টির ক্ষেত্রে ভিন্নমত জানিয়েছে।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের ১৩১টি প্রস্তাবের মধ্যে বেশিরভাগেই বিএনপি একমত হয়েছে। বিশেষ করে ৭০ অনুচ্ছেদ ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণের বিষয়ে ছাড় দিয়েছে দলটি। এমনকি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও সংসদে বিরোধী দলকে কমিটির সভাপতির পদ দানের বিষয়েও একমত হয়েছে তারা।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন এবং নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও ঐকমত্য হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত না করে বড় পরিবর্তন আনা উচিত নয়।

তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিএনপি আজ আরও ঐক্যবদ্ধ ও জনপ্রিয় হয়েছে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দলের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

বিএনপির বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে—সংস্কারের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি থাকলেও, জাতীয় স্বার্থে যেসব বিষয় গ্রহণযোগ্য নয়, তাতে দল আপসহীন। সেইসঙ্গে তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিবর্তন চায়, যা জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button