আইন ও আদালতলিড নিউজ

চেক-ডিজঅনার মামলায় কাউকে জেলে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থী: হাইকোর্ট

এবিএনএ: চেক-ডিজঅনার (এনআই অ্যাক্ট) মামলায় কোনো ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থী বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এটি সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তি করে আজ রোববার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন।

বিচারক বলেন, নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনের চেক-ডিজঅনার সংক্রান্ত মামলায় কোনো ব্যক্তিকে জেলে বন্দি রাখা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরনের নামান্তর। তাই এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা সংশোধন করে চেক-ডিজঅনার মামলায় জেলে পাঠানোর বিধান বাতিল করার জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পাশাপাশি নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনের ১৩৮ ধারা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত চেক-ডিজঅনারের মামলা নিষ্পত্তির জন্য একটি গাইডলাইন দিয়েছেন বিচারক। উন্নত বিশ্বের উদাহরণ টেনে আদালত বলেন, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চেক-ডিজঅনার মামলায় জেলে পাঠানোর বিধান নেই। এসব দেশে চেক-ডিজঅনার মামলাগুলোকে দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আদালত আরও বলেন, কন্ট্রাকচুয়াল অফ নেগোসিয়েশন বা চুক্তিগত দায়-দায়িত্ব পূরণে ব্যর্থতার জন্য কোনো ব্যক্তিকে জেলে বন্দি রাখা যাবে না। চুক্তিগত দায়-দায়িত্ব পূরণে ব্যর্থতার জন্য যদি কারাগারে পাঠানো হয় তাহলে অচিরেই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কারাগারে চলে যাবে। এটা কারও কাম্য নয়।

আদালত জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ যতদিন ১৩৮ ধারা সংশোধন না করে বা সংশোধনী না আনে ততদিন পর্যন্ত নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনের ১৩৮ ধারার আওতায় চেক-ডিজঅনার মামলা আপসযোগ্য হবে। চেক-ডিজঅনার মামলা বিচারের এখতিয়ারসম্পন্ন দেশের সব আদালতে সাজার পরিবর্তে তিন গুণ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে। আদালত এই রায়ের অনুলিপি দেশের সব আদালত ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশেক মোমেন।

Share this content:

Back to top button