

এবিএনএ : মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে ৮ দশমিক ১ কিলোমিটার উড়াল রেলপথ (ভায়াডাক্ট) নির্মাণে তিনটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসি)। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে কাজ শেষ হবে। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০২০ সালে কাজ শেষ করে এ অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) কাজ চলছে আটটি প্যাকেজে। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্যাকেজ-৫ ও ৬ এর ঠিকাদার নিয়োগে চুক্তি হয়। ডিএমটিসি ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি সই হয়। ডিএমটিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম,এ,এন, ছিদ্দিক এবং ঠিাকাদার দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা চুক্তিতে সই করেন।
প্যাকেজ-৫ এর অধীনে ১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকায় আগারগাঁও থেকে কাওরানবাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ করবে বাংলাদেশের আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও জাপানের অ্যাবে নিক্কো। ২ হাজার ৩৩২ কোটি টাকায় ৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ করবে জাপানের সুমিতোমো মিতসুই কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। ভায়াডাক্টের ওপর চলবে বিদ্যুতচালিত ট্রেন।
প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম ধাপে, দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার উড়াল রেলপথ নির্মাণ করা হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ অংশের কাজ শেষে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। গত মাসে দিয়াবাড়িতে ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেল। চলতি মাসে আগারগাঁওয়ে স্থাপন করা হবে আরকেটি স্প্যান। এভাবে উভয়প্রান্ত থেকে আগামী ১৮ মাসে আরও ৭৬৭টি স্প্যান স্থাপন করা হবে।
আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ সড়কে ভূগর্ভস্থ পরিসেবার লাইন স্থানান্তরের কাজ চলছে। এ কাজ শেষে শুরু হবে ভায়াডাক্ট নির্মাণের কাজ। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী আড়াই বছরে ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্ভব। পরিকল্পনার চেয়ে দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় মেট্রোরেলের সাত জাপানি পরামর্শক নিহত হয়েছিলেন। মর্মান্তিক এ এ ঘটনায় প্রকল্পের কাজ ছয় মাস পিছিয়ে যায়। দ্রুত কাজ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। ২০১৯ সালের মধ্যে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও এবং ২০২০ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ শেষ হবে। যা ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাপান মানসম্পন্ন কাজ করছে। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হবে।
মেট্রোরেরল প্রকল্পে ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। বাকি টাকা জোগান দিচ্ছে সরকার। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল পথে স্টেশন থাকবে ১৬টি। সড়কের ওপরে এসব স্টেশন নির্মাণ করা হবে। ঘণ্টায় ৬০ যাত্রী যাতায়ত করতে পারবেন এ পথে। ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৩৭ মিনিট।