

এবিএনএ : ক্রেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হালাল খাদ্যসামগ্রী হচ্ছে কি না, এ নিয়ে নিউজার্সিতে অভিযান শুরু হয়েছে। রমজান মাসের শুরুতে রাজ্যের কনজ্যুমার প্রোটেকশন বিভাগ থেকে ১১০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তল্লাশি করা হয়েছে। গত সপ্তাহে পরিচালিত কনজ্যুমার প্রোটেকশন বিভাগের এ অভিযানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে ঘোষিত রীতি মেনে চলার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। নিউজার্সি স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস্টফার পরিনোর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
বাংলাদেশি-অধ্যুষিত প্যাটারসন সিটি থেকে মধ্য নিউজার্সির মুসলমানবহুল এলাকাগুলোতে হালাল খাবার বিক্রি নিশ্চিতকরণ অভিযান পরিচালিত হয়। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, হালাল রীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করার পর্যাপ্ত তথ্য বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি। কীভাবে পশু জবাই করা হচ্ছে, মাংস কীভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং কীভাবে তা স্টোরে সরবরাহ করা হচ্ছে—এসব কিছু ক্রেতাকে জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নিউজার্সি রাজ্যের ‘হালাল ফুড কনজ্যুমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ অনুযায়ী এসব তথ্য অবশ্যই গ্রাহকের দৃষ্টিতে পড়ার মতো ডিসপ্লে থাকতে হবে। তবে ‘হালাল’ শব্দের ধর্মীয় কোনো ব্যাখ্যা নিউজার্সি প্রশাসনে না থাকলেও ‘নিউজার্সি কনজ্যুমার ফুড অ্যাক্ট’ অনুযায়ী এসব খাদ্য যেখানে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করা হবে, সেখানে অ-হালাল হিসেবে বিবেচিত কোনো খাদ্য রাখা যাবে না। মাংস কাটার জন্য পৃথক বোর্ড রাখতে হবে। ফ্রিজও থাকতে হবে সম্পূর্ণ আলাদা।
ক্রিস্টফার পরিনো বলেছেন, রোজাদাররা যখন খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করবেন, তখন তাঁদের আস্থা থাকতে হবে যে সেগুলো ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করতেই পবিত্র রমজানের আগে এই অভিযান চালানো হয়েছে, যাতে ব্যবসায়ীরা সতর্ক থাকেন হালাল খাদ্য প্রস্তুতের ব্যাপারে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ‘হালাল’ লিখে রাখলেই হবে না, তা মেনে চলতে হবে। এ অভিযানে ১১০টি রেস্টুরেন্ট ও গ্রোসারি পরিদর্শন করা হয়। এগুলো প্যাসেইক কাউন্টি থেকে ক্যামডেন কাউন্টির মধ্যে অবস্থিত এবং সব কটিতেই ‘হালাল’ লেখা সাইন রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নিউজার্সি কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের পরিচালক স্টিভ লি বলেন, ‘হালাল খাদ্য প্রস্তুত ও বিক্রির ক্ষেত্রে আমাদের আইন যথাযথভাবে বলবৎ রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। রেস্টুরেন্ট অথবা গ্রোসারির সামনে সাইন লাগালেই চলবে না, সব সময় হালাল খাদ্য প্রস্তুতপ্রণালিও প্রদর্শন করতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের পরিদর্শকেরাও যাতে তা দেখতে পারেন।’
আমেরিকার রাজ্য অনুযায়ী কনজ্যুমার আইন ভিন্ন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা হোটেল-রেস্তোরাঁয় হালালঘোষিত খাদ্য বিপণন নিশ্চিত করার জন্য নিউজার্সি আমেরিকার মধ্যে শীর্ষ অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। রাজ্যের কনজ্যুমার প্রোটেকশন বিভাগের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি কমিটি হালাল খাদ্যসামগ্রী বিক্রির প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করা হয়। নিউজার্সিতে হালাল খাদ্য বিক্রি নিয়ে অভিযানের সংবাদ আশপাশের রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার পর ‘হালাল’ সাইনওয়ালা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও সতর্ক অবস্থা বিরাজ করছে।