বিনোদন

অ্যাওয়ার্ড শো ছেড়ে মনু মিয়ার জানাজায় ছুটে গেলেন খায়রুল বাসার

পুরস্কার নেওয়ার অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে কিশোরগঞ্জে মনু মিয়ার শেষ বিদায়ে উপস্থিত হলেন অভিনেতা খায়রুল বাসার, জানালেন হৃদয়ছোঁয়া অভিজ্ঞতা

এবিএনএ: কিশোরগঞ্জের ইটনার সেই মনু মিয়া—যিনি বিনা পারিশ্রমিকে জীবনের প্রায় ৫০ বছর কবর খুঁড়েছেন—চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যুসংবাদ শুনে আর দেরি না করে কিশোরগঞ্জে পৌঁছে গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার, যদিও সে দিনই ঢাকায় একটি অ্যাওয়ার্ড শোতে তাঁর পুরস্কার নেওয়ার কথা ছিল।

৬৭ বছর বয়সী মনু মিয়া জীবদ্দশায় খুঁড়েছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর, বিনিময়ে নেননি কোনো পারিশ্রমিক বা উপহার। নিজের কাজকে তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিবেদন করেছিলেন।

মনু মিয়ার জীবনের গল্প প্রথমবার জানতে পারেন অভিনেতা খায়রুল বাসার, যখন মনু মিয়া হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেই সময় মনু মিয়ার প্রাণপ্রিয় ঘোড়াটিকে কেউ হত্যা করলে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বাসার তাকে একটি ঘোড়া উপহার দিতে চাইলেও, মনু মিয়া কিছুই নেননি—শুধু চেয়েছিলেন দোয়া।

তিন দিন আগে মনু মিয়ার সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয় বাসারের। মৃত্যুসংবাদে আবেগাপ্লুত বাসার বলেন, “পুরস্কার আরও পাওয়া যাবে, কিন্তু এই মানুষটিকে শেষবার দেখা না হলে সারাজীবন আফসোস থেকে যেতো।”

কিশোরগঞ্জে গিয়ে বাসার দেখেছেন মনু মিয়ার নিজ হাতে বানানো সরঞ্জাম ও সেসব সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা জিনিসপত্র। তাঁর কথায়, “মনু কাকা আমাকে বহুবার বাড়িতে ডাকতেন। কথা দিয়েছিলাম যাব, কিন্তু আজ এলাম যখন তিনি নেই।”

খায়রুল বাসার তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মনু মিয়াকে ‘আজন্ম নায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে, “মনু মিয়া নিজে অসহায় ছিলেন না, বরং অসহায়দের সহায় হতে চেয়েছেন। এই সমাজে এমন উদাহরণ খুব বিরল।”

মনু মিয়ার জীবনব্যাপী অবদান আমাদের শিখিয়ে দেয় মানবতার প্রকৃত রূপ। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি অন্যের সেবা করে গেছেন নিঃস্বার্থভাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button