ডিম-পেঁয়াজের হঠাৎ দামে আগুন: বাজারে অস্থিরতা, ভোক্তারা চাপে
সরবরাহ কম ও বর্ষা মৌসুমের প্রভাবেই ডিম ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের, তবে ক্রেতাদের অভিযোগ কৃত্রিম সংকটের


এবিএনএ: ডিম ও পেঁয়াজ—দুইটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। চলতি বর্ষা মৌসুম, সরবরাহ ঘাটতি ও মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে উৎপাদন কমে যাওয়াকেই দায়ী করছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। তবে ভোক্তাদের মতে, পুরনো ‘সিন্ডিকেট’ পদ্ধতি নতুন করে সক্রিয় হয়েছে—তাদের দাবি, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে।
গত এক মাস ধরে ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা থাকলেও সম্প্রতি সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়ে গেছে ১০-১৫ টাকা। এখন লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়—যা আগের ছিল ১১০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানে এই দাম আরও ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারিতে দাম বাড়ার কারণে তাদেরও খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে, পাইকারিরা বলছেন—বর্ষার কারণে উৎপাদন কম, তাছাড়া অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে।
এদিকে পেঁয়াজের দামও লাফিয়ে বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও ৮০ টাকাও ছাড়িয়ে গেছে। পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৬৫ টাকার বেশি দামে, জানালেন খুচরা বিক্রেতা আশিক।
পাবনা ও ফরিদপুর অঞ্চলের মোকামগুলোতে দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ঢাকার বাজারে। পাইকারি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৫৪-৫৫ টাকায়, এখন তা ৭০-৭২ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তিনি এর জন্য বৃষ্টি ও আগের লোকসানকে দায়ী করেন। তিনি আরও জানান, দেশি পেঁয়াজের মাধ্যমে চাহিদা মেটানো গেলেও সংরক্ষণ সমস্যার কারণে ক্ষতি হচ্ছে।
মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী রবিন অধিকারীর ভাষ্যে, বর্ষার কারণে অনেক পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে এবং কিছু পেঁয়াজে চারা গজাচ্ছে, যার ফলে ভালো পেঁয়াজ বাছাইয়ে সময় লাগছে, দামও বাড়ছে।
তবে আশার কথা, আগের বছরের মতো অতিরিক্ত অস্থিরতা এবার নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা মনে করছেন, পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও সংরক্ষণ ও পরিবহন জটিলতায় এই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
ভোক্তাদের দাবি, বাজারে যথাযথ নজরদারি না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের কাঁধে অতিরিক্ত চাপ চাপিয়ে দিচ্ছে।