অর্থ বাণিজ্য

বিদ্যুৎ সংকট ও উৎপাদনশীলতার ঘাটতিতে বন্ধ হচ্ছে মধ্য ও নিম্নমানের বহু পোশাক কারখানা

বিজিএমইএ সভাপতির আশঙ্কা—গ্যাস সংকট, বিনিয়োগ অনিশ্চয়তা ও নীতিগত সমন্বয়ের অভাবে আরএমজি খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে

এবিএনএ:  বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানিয়েছেন, অনেক মধ্য ও নিম্নমানের কারখানা প্রাথমিক উৎপাদনশীলতার সূচক মানছে না, ফলে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং শ্রমিক অসন্তোষও বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচ্যাম) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত: অগ্রযাত্রার পথ’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি জানান, সংগঠনের প্রায় ৭,১০০ সদস্যের মধ্যে বর্তমানে রপ্তানিতে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা তিন হাজারেরও কম।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট বিশেষ করে গ্যাসনির্ভর ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্পের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা। মাত্র দুটি এফএসআরইউ চালু থাকায় অবকাঠামো সম্প্রসারণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে হঠাৎ করে বাতিল হওয়া ৫৪টি এলওআই পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান। সৌরবিদ্যুতে ‘মার্চেন্ট পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট’কে ইতিবাচক উল্লেখ করলেও জমির স্বল্পতাকে বড় বাধা হিসেবে তুলে ধরেন।

অ্যামচ্যাম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি হয় ৪০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৮ শতাংশ। পশ্চিমা বাজারের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবর্তনে অর্থনীতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে। তিনি সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১–২ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, এখন সময় এসেছে নিম্নমূল্যের পণ্য থেকে উচ্চমূল্যের পণ্যে বৈচিত্র্য আনার। উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতা বাড়ানো ছাড়া এলডিসি উত্তরণের পর টিকে থাকা কঠিন হবে।

ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন আংশিক রপ্তানিকারকদের জন্য ব্যাংক–সমর্থিত বন্ড সুবিধা চালুর প্রস্তাব দেন এবং জানান, ‘১০০ বিলিয়ন ডলার আরএমজি এক্সপোর্ট সেল’ গঠন করা হচ্ছে, যা জ্বালানি, ব্যাংকিং ও কর–সংক্রান্ত সমন্বয় ত্বরান্বিত করবে।

সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, বড় ব্র্যান্ডের অনুপস্থিতি, ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ দুর্বলতা, নীতি সমন্বয় ঘাটতি, স্বয়ংক্রিয়করণ, সবুজ উৎপাদন ও লজিস্টিক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button