এবিএনএ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রসুল বা প্রেরিত পুরুষ এটি হলো ইমানের মূল ভিত্তি। ইসলাম এই ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হলে পরকালে জান্নাতের সান্নিধ্য পেতে হলে আল্লাহ এবং রসুুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত জীবন বিধানে অটল থাকতে হবে। এখলাসের সঙ্গে একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সব ইবাদত পালন করতে হবে। আল্লাহ ও তার রসুলের পথকে যারা আগ্রহ্য করবেন তাদের কোনো ইবাদতই গ্রহণযোগ্য হবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইমানের সত্তরের অধিক শাখা-প্রশাখা তথা বিধিবিধান রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বোত্কৃষ্ট শাখা হলো আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই ঘোষণা করা এবং সর্বনিম্ন শাখা হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কোনো বস্তু দূর করা। আর লজ্জাশীলতা ইমানের একটি বিশেষ শাখা। (বুখারি ও মুসলিম) আল্লাহকে একমাত্র মাবুদ হিসেবে মনেপ্রাণে স্বীকার করা এবং তার ইবাদতের তাগিদ দেওয়া হয়েছে অসংখ্য হাদিসে। হজরত ওমর বিন খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ঘটনাক্রমে আমরা একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় সাদা পোশাকধারী ও কালো কেশের অধিকারী এক লোক আমাদের সামনে এলেন। যার শরীর ও পোশাকে সফরের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। আমাদের কেউ তাকে চিনতে পারছিল না। লোকটি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসে পড়লেন। অতঃপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই হাঁটুর সঙ্গে নিজের দুই হাঁটু মিশিয়ে এবং নিজের দুই হাত তার দুই ঊরুর ওপর রেখে আরজ করলেন, হে মুহাম্মদ (সা.) আমাকে ইসলাম সম্পর্কে অবহিত করুন। হুজুর (সা.) উত্তর করলেন ইসলাম হলো তুমি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তার রসুল। নামাজ কায়েম করবে, জাকাত আদায় করবে, রমজানে রোজা রাখবে এবং বায়তুল্লাহ শরিফে তুমি যদি পৌঁছতে সক্ষম হও তবে হজ করবে। লোকটি বললেন ঠিকই বললেন। তার এ কথায় আমরা আশ্চর্যান্বিত হলাম যে, তিনি স্বয়ং হুজুরকে প্রশ্নও করলেন আবার তিনিই তাকে সত্যবাদী বলে মন্তব্য করলেন। অতঃপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন আমাকে বলুন ইমান কাকে বলে? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন আল্লাহপাককে বিশ্বাস করবে, তার ফেরেশতা, তার কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। লোকটি পুনঃজিজ্ঞাসা করলেন— ইহসান কি? উত্তরে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইহসান হলো তুমি আল্লাহপাকের ইবাদত এরূপ করবে, যেন তুমি তাকে দেখছ। আর যদি তুমি তাকে দেখতে না-ই পাও তাহলে এরূপে ইবাদত করবে যেন তিনি তোমাকে দেখছেন। এসব কথা শুনে লোকটি বললেন, আপনি সত্যিই বললেন। (বুখারি ও মুসলিম)। লেখক : ইসলামী গবেষক।