এবিএনএ : দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক চাই উদযাপন কমিটির ৭ম মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
স্পিকার বলেন, ‘দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি সমাজের প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। এ ব্যাপারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। ’
প্রতিটি দুর্ঘটনাই প্রতিরোধযোগ্য এবং সচেতনতার মাধ্যমেই তা সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাড়ি চালানোর সময় চালকের মোবাইল ফোন ব্যবহারে যেমন দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, তেমনিভাবে পথচারীরাও যদি মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে অসাবধানতাবশত: রাস্তা পারাপার হন তাহলেও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই চালকের পাশাপাশি পথচারীদেরও সচেতন হওয়া জরুরি।
স্পিকার বলেন, ‘পথচারীরা যেমন দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে থাকেন, তেমনি যিনি গাড়ি চালান সেই চালকও কিন্তু ঝুঁকিমুক্ত নন। সুতরাং চালক যদি নিজের গাড়িটি ট্রাফিক আইন ও নিয়ম মেনে চালান তাহলে তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকিও হ্রাস করছেন। সেই সাথে তার গাড়িতে যারা রয়েছেন তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করছেন। ’
সড়ক নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে কোনো কিছুই চলতে পারে না। শুধুই আইন নয়, নিরাপদ সড়কের জন্য যে সমস্যাগুলো অন্তরায় সেগুলো চিহ্নিত করে একটি কার্যকর আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। যে আইন রয়েছে সেটাকে যুগোপযোগী করা যায়।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের যে দাবি সেটা দল, মত নির্বিশেষে সকলেরই দাবি। এই দাবির সাথে আমরা সকলেই সম্পৃক্ত। এর সাথে কোনো বিবেদ বৈষম্যের সুযোগ নেই। এই দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের সকলের কাজ করতে হবে। ’
জনসচেতনতার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, স্কুল পর্যায় থেকে সচেতনতা গড়ে তোলা উচিত। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক আইন বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকেও অন্তর্ভূক্ত করা যায়।
দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করে স্পিকার বলেন, রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিংগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি সকলে যদি আইন মেনে চলি তাহলে নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে আসবে।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহসান-উল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন ও বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক হুসেইন আহমেদ মজুমদার এ সময় বক্তৃতা করেন।