জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

এবিএনএ : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। তার এই ভাষণ ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর মেমোরি অব দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনেস্কো মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা ৩০ অক্টোবর সোমবার প্যারিসে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির ফলে সারা বিশ্ব এখন আরও বিশদভাবে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
৪৬ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) ঐতিহাসিক এই ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বজ্রকণ্ঠে তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
তার ওই ভাষণের পর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।


জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থার (ইউনেসকো) মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড (এমওডব্লিউ) কর্মসূচির অধীনে আন্তর্জাতিক তালিকায় (ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার) বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ ৭৮টি বিষয়কে স্থান দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে। এ তালিকায় ৪৮ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব রয়েছে এমন বিষয়গুলোকেই এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন অংশের ঘটনার সংরক্ষণ ও সবার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ইউনেস্কো। এই তালিকায় স্থান পেতে হলে পর্যাপ্ত গ্রহণযোগ্যতা ও ঐতিহাসিক প্রভাব থাকতে হয়।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে ২৪-২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল এডভাইজরি কমিটির (আইএসি) চার দিনব্যাপী বৈঠকের পর এই সুপারিশ করে কমিটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় সংগ্রহশালার মহাপরিচালক ড. আবদুল্লাহ আল-রাইসির সভাপতিত্বে বিভিন্ন দেশের ১৪ জন প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞ নিয়ে আইএসি’র এ কমিটি গঠন করা হয়। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে নতুন করে প্রস্তাব করা ঐতিহাসিক দলিল পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করেন। দুই বছরের প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬-১৭ সালের জন্য ৭৮টি বিষয়কে তারা মনোনয়ন দেন।
এ বিষয়ে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড পরিচালিত হওয়া উচিত দালিলিক ঐতিহ্য ও স্মারক সংরক্ষণের জন্য। যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আলোচনা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শান্তির চেতনা তাদের মনে লালন করতে পারে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম চালু করে ইউনেস্কো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দালিলিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ব্যবহারে সচেতনতার তাগিদে এটি চালু হয়।

Share this content:

Back to top button