আমেরিকালিড নিউজ

‘বাংলাদেশে টিভি টক শো বিনোদনে পরিণত হয়েছে’

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের (এবিপিসি) এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ভোরের কাগজ সম্পাদক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব শ্যামল দত্ত বলেছেন, বাংলাদেশে টিভি টকশো এখন বিনোদনে পরিণত হয়েছে। মানুষ এটাকে খুব উপভোগ করে। আর এজন্য গভীর রাতেও তারা টিভি সেটের সামনে বসে টক শো দেখেন।  স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নিউ মেজবান রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষেরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং প্রবাসীদের অধিকারসহ নানান বিষয় উঠে আসে। এসব বিষয়ে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন শ্যামল দত্ত। বাংলাদেশের মিডিয়ায় অস্থিরতা প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত বলেন, বিশ্বের আর কোনো দেশে বাংলাদেশের মত এত গণমাধ্যম নেই। অথচ সাংবাদিকতায় এখনো পেশাদারিত্ব গড়ে ওঠেনি। কারণ অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিক রাজনীতিবিদ অথবা ব্যবসায়ী। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও এখন আর কেউ এই পেশায় আসতে সাহস পাচ্ছে না।  সাম্প্রতিক কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশে কোটার অবশ্যই প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে নারীরা অবহেলিত। চাকরিতে তাদের বিশেষ কোটা থাকা উচিত। তা না হলে সমাজ থেকে নারী-পুরুষের বৈষম্য কখনোই দূর হবে না। তিনি বলেন, একাত্তরে কৃষক ও নিম্ন-মত্তবিত্তের সন্তানেরা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। অথচ বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা বয়সজনিত ও নানা কারণে সরকারি চাকরিতে উপেক্ষিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য চাকরিতে অবশ্যই কোটা থাকা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত আরো বলেন, বাংলাদেশে একটি বিশেষ অঞ্চলের লোক সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধান হচ্ছেন। অথচ দেশের অনেক জেলার লোক এ সুযোগটি পাচ্ছেন না। এজন্যও জেলাভিত্তিক নিয়োগেও কোটা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অংশ নেন বঙ্গবন্ধু ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া, পিপল এন টেকের সিইও আবু বকর হানিফ, স্বাধীন বাংলা বেতার কন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিরের ভাইস-চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খান মেরাজ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হুসাইন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি রাশেদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বারী, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) পরিচালক আবুলফজল দিদারুল ইসলাম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, মূলধারার রাজনীতিক খোরশেদ খন্দকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত বিশ্বাস. বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী সদস্য সাদী মিন্টু, মিরসরাই সমিতি যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, সাপ্তাহিক বর্ণমালার প্রধান সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, প্রেসক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর শিবলী, কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, কার্যকরী সদস্য নিহার সিদ্দিকী, কানু দত্ত, সদস্য আকবর হায়দার কিরণ, মিজানুর রহমান, সাজ্জাদ হোসাইন, জাহেদ শরীফ, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, হেলাল মাহমুদ প্রমুখ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আমন্ত্রণে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন শ্যামল দত্তসহ বাংলাদেশের বেশকয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও শ্রম দপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

Share this content:

Back to top button