‘২০৪১ সালে প্রথম ২০ দেশের কাতারে থাকবে বাংলাদেশ’

এবিএনএ: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ২০৪১ সালে প্রথম শ্রেণির ২০টি দেশের কাতারে থাকবে বাংলাদেশ। রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দুই দিনব্যাপী এ কনফারেন্সের আয়োজন করে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সালে চীন প্রথম ও ভারত হবে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের অবস্থান হবে মধ্যখানে। তাই আমাদের চীন ও ভারতকে সঙ্গে নিয়ে সামনে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০৩০ সালে প্রত্যেক পরিবারে একজনের করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে। ২০৩০ সালে টেলিস্কোপ দিয়ে দারিদ্র্য খুঁজে পাওয়া যাবে না।’ আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এখন দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আগামী ২০২৭ সালে বাংলাদেশে বিশ্বের মধ্যে ২৬তম অর্থনীতির দেশ হবে। দারিদ্র্যের হার শূন্যে নেমে আসবে। এ সময় আমরা মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে পেছনে ফেলব।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে অধিক হারে মুনাফার সুযোগ আছে বাংলাদেশে। তরুণ ও বর্ধমান জনসংখ্যার সুযোগ নেয়া যাবে। কেননা, বর্তমানে বাংলাদেশে জনমিতিক লভ্যাংশের ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট’ সুযোগ বিদ্যমান। আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। চীন, ভারত এবং এশিয়ার অন্যান্য ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানে আছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউট সোর্সিংয়ের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। সুতারাং কৌশলগত কারণেই বাংলাদেশকে এড়িয়ে বিশ্বের সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে প্রভাবশালী ২০ দেশের তালিকায় আসবে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যেসব দেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে তার মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে। ওই সময় বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এমন শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় ঢুকবে বাংলাদেশ।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আরো বলেন, এখন যেসব মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে এসবের প্রভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিতে হবে, সেজন্য নতুন প্রযুক্তি আনতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলে এসেছে। এ সময় রোবোটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, বায়োটেকনোলজি, ন্যানো টেকনোলজি ভূমিকা রাখবে। যেখানে ব্লকচেইন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে হয়ত চাকরি কমে যাবে, তবে আবার নতুন নতুন চাকুরির সুযোগ তৈরি হবে, মানবসম্পদ সমৃদ্ধ হবে। শিল্প খাতে দ্রুত উন্নতি আনতে হবে, জনমিতির সুবিধা নিতে হবে। অবিশ্বাস্য গতিতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিত্ত-বৈভব আকর্ষণ করে না । দেশের মানুষের ভালবাসা তাকে আকৃষ্ট করে। তিনি সাধারণ মানুষের উন্নতিতে কাজ করে চলেছেন।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, অর্থনৈতিক উন্নতি ও সামাজিক উন্নতিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে মডেল। সম্প্রতি এডিবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অগ্রগামী। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ হবে। এছাড়া, রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ভালো। প্রতি বছর শ্রমশক্তিতে ২০ লাখ তরুণ যুক্ত হচ্ছে। জনমিতির সুবিধা নিতে পারলে উন্নতি আরো বেগবান হবে।
Share this content: