অর্থ বাণিজ্যলিড নিউজ

১ এপ্রিল থেকে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ প্রদান সম্ভব: গভর্নর

এবিএনএ : আগামী ১ এপ্রিল হতে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। মঙ্গলবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার কার্যালয়ে যান।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ৮ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে না, উপরন্তু বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা ২০১৯ সালের নভেম্বরে ছিল ৯.৮৭ শতাংশ। ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এর অন্যতম প্রধান কারণ বলে এ সময় মত দেন তিনি।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ স্থবিরতা কাটানোর জন্য ব্যবসা-সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান এবং আগামী ১ এপ্রিল থেকে এটি কার্যকর করতে সবার সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশিরভাগ ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। অর্থনীতি, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, জনগণের অবস্থার উন্নয়নে সরকার সিঙ্গেল ডিজিট হারে ঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আগামী ১ এপ্রিল থেতে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন

তিনি আরও বলেন, সরকার ইতোমধ্যে বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং দেশের ব্যবসায়ী সমাজ এ সুযোগ গ্রহণ করে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হতে পারবে। খেলাপি ঋণ বিষয়ে ফজলে কবির বলেন, ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি চিহ্নিতকরণে আইনে সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা রয়েছে, তবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস সংযোগ অথবা ব্যাংক ঋণ প্রভৃতি সেবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না পেয়ে কোনো উদ্যোক্তা যদি ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যর্থ হন, সেটি বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সত্যিকারের ঋণ খেলাপি চিহ্নিতকরণে ব্যাংকসমূহের যত্নবান হওয়া আবশ্যক।

বন্ড মার্কেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার করেছে। এটি বাংলাদেশের বন্ড মার্কেট সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে এ সময় অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া দেশে একটি সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেট চালু একান্ত জরুরি বলে মত দেন গভর্নর। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং ইকোসিস্টেম, সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং প্রাক্কলিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশে ব্যাংক প্রতিনিয়ত নীতি সহায়তা প্রদান করছে এবং সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই পরিচালক আন্দালিব হাসান, আরমান হক, নূহের লতিফ খান এবং ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী অংশগ্রহণ করেন। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএ, এফসিএস, পরিচালক দীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, মনোয়ার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জোহা চৌধুরী ও এস এম জিল্লুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button